সকালের দুনিয়া ডেস্ক ১৯ অক্টোবর ২০২৪ , ৫:৫৪:৩২ প্রিন্ট সংস্করণ
ইসলামের দৃষ্টিতে অশুভ লক্ষণ বলে কিছু নেই। নেই কোনো কুসংস্কারের স্থান। একসময় মানুষ অশিক্ষার কারণে বহু জিনিসকে অশুভ লক্ষণ মনে করলেও এখন আর মানুষ এসব কুসংস্কারে বিশ্বাস করে না। তবে এই প্রবণতা পুরোপুরি যায়নি।
এখনো বহু শিক্ষিত মানুষ প্রাচীন অনেক কুসংস্কার বিশ্বাস করে। বহু জিনিসকে অশুভ মনে করে। যেমন- দোকানের প্রথম কাস্টমারকে ফেরত দেওয়া। পরীক্ষার হলে যাওয়ার সময় ডিম খেয়ে যাওয়া।
বিবাহিত নারীদের হাতে চুড়ি না থাকা, ঘর থেকে বের হওয়ার সময় পেছন থেকে ডাক দেওয়া, ভাই-বোন একসঙ্গে মুরগি জবাই করা, ঘর থেকে বের হওয়ার সময় বিধবা নারী চোখে পড়া ইত্যাদির মতো বহু জিনিসকে আমাদের সমাজের কেউ কেউ এখনো অশুভ লক্ষণ মনে করে। অথচ কোনো কিছুকে অশুভ লক্ষণ মনে করার প্রবণতা জাহেলি যুগের। সে যুগের লোকেরা বহু জিনিসকে অশুভ লক্ষণ মনে করত। তারা কোনো গুরুত্বপূর্ণ কাজে যাওয়ার আগে নিজেদের পোষা পাখি উড়িয়ে দিত অথবা কোনো বন্য পাখিকে ঢিল ছুড়ত।
পাখিটি ডান দিকে উড়ে গেলে কাজটি শুভ বলে ধারণা করত। কিন্তু পাখিটি বাঁ দিকে উড়ে গেলে অশুভ লক্ষণ ভাবত। ফলে তারা ওই কাজ আর করত না। ইসলামের দৃষ্টিতে এভাবে মনগড়া পদ্ধতিতে বিভিন্ন জিনিস অশুভ মনে করা নিষিদ্ধ। হাদিসে একে শিরক বলা হয়েছে।
হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘পাখির সাহায্যে ভালো-মন্দ নির্ণয় করা, কোনো কিছুকে অশুভ লক্ষণ ভাবা, মাটিতে রেখা টেনে শুভ-অশুভ নির্ণয় করা কুফরি।’ (আবু দাউদ : ৩৯০৭)
অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, নবীজি (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘কোনো বস্তুকে অশুভ লক্ষণ মনে করা শিরকি কাজ।’ এ বাক্যটি তিনি তিনবার উচ্চারণ করেছেন। আর আমাদের মধ্যে কেউ নেই, যার মনে অশুভ লক্ষণের ধারণার উদ্রেক না হয়। কিন্তু আল্লাহর ওপর পূর্ণ ভরসা করলে তিনি তা দূরীভূত করে দেন।’ (আবু দাউদ : ৩৯১২)
গ্রামগঞ্জে এখনো অনেকে প্যাঁচাকে অশুভ মনে করে, কোনো বাড়ির উঠানে প্যাঁচার আওয়াজ শোনা গেলে তারা আতঙ্কিত হয়। অথচ ইসলামে এর কোনো ভিত্তি নেই, বরং একে অশুভ মনে করার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা আছে।
এই মর্মে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘রোগে সংক্রমিত হওয়া বলতে কিছুই নেই, কোনো কিছুতে অশুভ নেই। প্যাঁচার মধ্যে কুলক্ষণ নেই এবং সফর মাসেও কোনো অশুভ নেই। তবে কুষ্ঠরোগী থেকে পলায়ন করো, যেমন তুমি বাঘ থেকে পলায়ন করে থাকো।’ (বুখারি : ৫৭৬৯)
অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, ‘ছোঁয়াচে রোগ বলতে কিছুই নেই। প্যাঁচার মধ্যে কুলক্ষণের কিছুই নেই। তারকার দরুন বৃষ্টি হওয়া ভিত্তিহীন এবং সফর মাসে অশুভ নেই।’ (মুসলিম, হাদিস : ৫৯২৬)