বগুড়া জেলা প্রতিনিধিঃ সামিদুল ইসলাম ১২ জুলাই ২০২৪ , ৮:১৫:০৬ প্রিন্ট সংস্করণ
বগুড়ায় ১৩ বছরের শিশু তামিম হত্যার মূল রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মোঃ এমদাদুল হক (২২) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃত এমদাদুল হক বগুড়ার শেরপুর উপজেলার দক্ষিণ আমইন এলাকার মোঃ খাদেমুল ইসলামের ছেলে।
শুক্রবার (১২ জুলাই) সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন পুলিশ সুপার জাকির হাসান।
সাংবাদিক সম্মেলনে পুলিশ সুপার জাকির হাসান বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ৪টার দিকে বগুড়ার শেরপুর উপজেলার আব্দুল মান্নান এর পুকুর পাড় থেকে এমদাদুলকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় আলামত হিসেবে ১টি চটের বস্তা, গরু বাঁধার রশি ১.৫ ফিট, ১টি কালো স্যান্ডেল, ১টি বেডসিট ও নীল রঙের প্লাস্টিকের ড্রাম কেটে বানানো নৌকা জব্দ করা হয়েছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে পুলিশ জানতে পারে- বগুড়ার শেরপুর উপজেলার আমইন গ্রামের মান্নান এর পুকুর ও গরুর খামার দেখাশোনার কাজ করে এমদাদুল হক। গত ১০ জুলাই সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ভুক্তভোগী তামিম পুকুর পাড়ের ঘর থেকে মাছের জন্য কিছু খাবার নেয়। বিষয়টি এমদাদুল দেখে ফেলে এবং তামিমকে কুপ্রস্তাব দেয়। তামিম সেই প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় মালিকের কাছে ধরিয়ে দেওয়ার ভয় দেখায়। তখন ভয়ে এমদাদুলের প্রস্তাবে রাজি হয় তামিম। এরপর তামিমকে পুকুর পাড়ের একটি ঘরে নিয়ে যায় এবং তামিম এর সাথে অপ্রকৃতস্থ সংগমের ফলে তামিম এর মলদার ফেটে যায়। এই অবস্থায় তামিম কান্নাকাটি ও চিৎকার শুরু করলে দুই হাত দিয়ে তামিমের গলা চেপে ধরে এমদাদুল। তবুও তামিম চিল্লাচিল্লির চেষ্টা করলে গলাই রশি পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এরপর ঘরে থাকা পাটের তৈরী ভুষির বস্তার মধ্যে তামিমের লাশ ভরে বস্তার মুখ শক্ত করে বেঁধে ঘরের পাশের পুকুরে থাকা প্লাস্টিকের ড্রামের তৈরী নৌকায় তুলে পুকুরের মাঝখানে নিয়ে ফেলে দেয় এবং প্রতিদিনের ন্যায় স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে থাকে।
পুলিশ সুপার আরও জানান, এই হত্যাকাণ্ডের সাথে আরও কেউ জড়িত আছে কিনা তা তদন্তাধীন আছে। আসামিকে জবানবন্দির জন্য আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে, গত ১০ জুলাই ভুক্তভোগী তামিমের মা মোছাঃ সুফিয়া খাতুন শেরপুর থানায় উপস্থিত হয়ে একটি নিখোঁজ জিডি করেন । ওই দিন সকাল ৭টায় বাড়ি থেকে বের হয় তামিম কিন্তু আর বাড়িতে ফিরেনি। ভুক্তভোগী তামিমের পরিবার এবং বগুড়া জেলা পুলিশ তাকে খোঁজাখুজি করতে থাকে। এরপর ১১ জুলাই সকাল ৮ টার দিকে পুকুরের পাহাড়াদার এমদাদুল পুকুর মালিক মান্নানকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সংবাদ দেন যে, পুকুরে একটি পাটের বস্তা ভাসছে। এতে মালিক আব্দুল মান্নান পুকুরের উত্তর পাড়ে এসে ভাসমান চটের বস্তাটি পানি থেকে তুলে বস্তার মুখ খুললে তারা মানুষের পাঁ দেখতে পেয়ে থানা পুলিশকে খবর দেয়।