খেলা

১২ দেশের অংশগ্রহণে পর্দা উঠলো “বঙ্গবন্ধু কাপ আন্তর্জাতিক কাবাডি টুর্নামেন্টের”

  প্রতিনিধি ২৭ মে ২০২৪ , ৫:৩৮:৩৯ প্রিন্ট সংস্করণ

১২ দেশের অংশগ্রহণে পর্দা উঠলো "বঙ্গবন্ধু কাপ আন্তর্জাতিক কাবাডি টুর্নামেন্টের"
১২ দেশের অংশগ্রহণে পর্দা উঠলো "বঙ্গবন্ধু কাপ আন্তর্জাতিক কাবাডি টুর্নামেন্টের"

বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনা ও বর্ণিল আয়োজনে ১২ দেশের অংশগ্রহণে পর্দা উঠলো মর্যাদার বঙ্গবন্ধু কাপ-২০২৪ আন্তর্জাতিক কাবাডি টুর্নামেন্টের।

রবিবার বিকেলে মিরপুর শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামে স্বাগতিক বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়া দলের খেলার মধ্য দিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু হয়। প্রথম দিন অন্যান্য ম্যাচে বিকাল ৫টায় মুখোমুখি হয় নেপাল ও কেনিয়া, সন্ধ্যা ৬টায় ইরাক ও জাপান এবং ৭টায় এদিনের শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হয় থাইল্যান্ড ও উগান্ডা। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী নাজমুল হাসান এমপি।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ, বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশনের সভাপতি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বিপিএম (বার), পিপিএম এবং ডিএমপি কমিশনার ও বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান বিপিএম (বার), পিপিএম (বার) উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে আয়োজক ও অংশগ্রহণকারী সকল দলের খেলোয়ারদের ধন্যবাদ জানিয়ে ক্রীড়ামন্ত্রী নাজমুল হাসান বলেন, কাবাডি হচ্ছে আমাদের জাতীয় ও প্রাণের খেলা। সারা দেশে এটিকে ছড়িয়ে দিতে হবে। এজন্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে যা যা করা দরকার তাই করা হবে। পাশাপাশি ব্যক্তিগতভাবেও কাজ করবো যাতে কাবাডিকে অনেক দূর এগিয়ে নেয়া যায়। এই খেলায় আমাদের অবশ্যই ভালো করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একজন ভালো ফুটবল খেলোয়াড় ছিলেন। শেখ কামাল, শেখ জামালসহ পুরো পরিবারটিই খেলাপ্রিয় একটি পরিবার। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মতো ক্রীড়াবান্ধব প্রধানমন্ত্রী পৃথিবীতে আর নেই। যার খেলাধুলার প্রতি রয়েছে বিশেষ আগ্রহ। খেলাধুলার উন্নয়নের লক্ষ্যে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেন তিনি। তার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে কাবাডিসহ অন্যান্য খেলাকেও বিশ্ব দরবারে তুলে ধরতে সক্ষম হবো।

সভাপতির বক্তব্যে আইজিপি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালে কাবাডিকে জাতীয় খেলা হিসেবে ঘোষণা করেন। এটি হচ্ছে গ্রাম বাংলার মাটি ও মানুষের খেলা। গত তিন বছরের ধারাবাহিকতায় এবারও আমরা বঙ্গবন্ধু কাপ আন্তর্জাতিক কাবাডি টুর্নামেন্ট আয়োজন করছি । ইউরোপ, আফ্রিকা ও এশিয়া মহাদেশের ১২টি দেশ এ আসরের শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে নামছে।

পুলিশ প্রধান বলেন, আমাদের জাতীয় খেলা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ক্রমে বিস্তৃত হচ্ছে। সাউথ এশিয়ান গেমস এবং এশিয়ান গেমসে ইতিমধ্যে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। অলিম্পিক গেমসে যুক্ত হওয়ার দাবি ক্রমেই জোরালো হচ্ছে। সে দাবির সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে কাবাডির মাধ্যমে আমরা অলিম্পিক মঞ্চে পা রাখতে চাই। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ কাবাডি ফেরারেশন নানা উন্নয়নমূলক পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছে।

বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ও ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধু ঘোষিত জাতীয় খেলা কাবাডি আমাদের দেশের জনপ্রিয় খেলা। কাবাডিকে বিশ্বমঞ্চে নিয়ে আসার জন্য ফেডারেশন অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। চতুর্থবারের মতো বঙ্গবন্ধু কাপ আন্তর্জাতিক কাবাডি টুর্নামেন্ট-২০২৪ আয়োজন করা হয়েছে। টুর্নামেন্টে এবার ইউরোপ, আফ্রিকা ও এশিয়া এই তিন মহাদেশের মোট ১২টি দল অংশগ্রহণ করছে। ভবিষ্যতে এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে।

অনুষ্ঠানের শুরুতে ১২টি দেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি নিয়ে মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়। দিনের প্রথম খেলায় স্বাগতিক বাংলাদেশ দক্ষিণ কোরিয়াকে ৬৭-২২ পয়েন্টে হারিয়ে টুর্নামেন্টে শুভ সূচনা করেছে।

প্রসঙ্গত, ২০২১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু কাপ আন্তর্জাতিক কাবাডি টুর্নামেন্টের যাত্রা শুরু হয়। করোনা মহামারীর কারণে সে সময় নেপাল, শ্রীলঙ্কা, কেনিয়া, পোল্যান্ড ও স্বাগতিক বাংলাদেশসহ পাঁচ দেশ অংশগ্রহণ করে।

২০২২ সালে দ্বিতীয় আসরে নেপাল, শ্রীলঙ্কা, কেনিয়া, ইংল্যান্ড, ইরাক, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও স্বাগতিক বাংলাদেশসহ আটটি দেশ অংশগ্রহণ করে। ২০২৩ সালে তৃতীয় আসরে অংশগ্রহণ করেছিল রেকর্ড ১২টি দেশ। এশিয়া, ইউরোপ ও আফ্রিকা মহাদেশের গণ্ডি পেরিয়ে টুর্নামেন্টের ব্যাপ্তি ছড়িয়ে পড়েছিল দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশেও। টুর্নামেন্টের মূল আকর্ষণ ছিল ফুটবলের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনার কাবাডি দল। তৃতীয় আসরে অংশ নেওয়া দেশগুলো ছিল আর্জেন্টিনা, ইংল্যান্ড, পোল্যান্ড, কেনিয়া, ইরাক, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, চাইনিজ তাইপে, নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও স্বাগতিক বাংলাদেশ।

আন্তর্জাতিক আঙিনায় সারা জাগানিয়া এ টুর্নামেন্ট এখন আন্তর্জাতিক কাবাডি ফেডারেশনের বর্ষপঞ্জিতে বিশেষ গুরুত্ব বহন করছে। বাংলাদেশের এ আসরটি বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব হিসেবেও বিবেচিত হচ্ছে। গত তিনটি আসর শহীদ নূর হোসেন ভলিবল স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হলেও এবার নতুন ভেন্যু হিসেবে মিরপুর শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

গেল তিনটি আসরের হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ। এবারও শিরোপায় চোখ রেখে ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে প্রস্তুতি অব্যাহত রেখেছে স্বাগতিকরা। প্রথম আসরে কেনিয়াকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো কোনো আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে শিরোপা জয়ের কৃতিত্ব দেখায় বাংলাদেশ। এরপর ২০২২ সালেও সেই কেনিয়াকে ফাইনালে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হয় স্বাগতিকরা। ২০২৩ আসরে চাইনিজ তাইপেকে হারিয়ে হ্যাটট্রিক শিরোপা ঘরে তোলে বাংলাদেশ।

আরও খবর

                   

সম্পর্কিত