দিনাজপুর প্রতিনিধি: রহমত-আল-আকাশ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ , ৩:০০:৪৭ প্রিন্ট সংস্করণ
দিনাজপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ ৮৪ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর ২৪) কোতয়ালী থানায় এই মামলাটি দায়ের করেন দিনাজপুর সদর উপজেলার উত্তর শেখপুরা গ্রামের আক্কাস আলীর স্ত্রী মোছা. রাশেদা খাতুন।
আক্কাসের ছেলে আশরাফুল আলম ওই হামলার ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হন। তার চোখসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে গুলির স্প্রিন্টার নিয়ে ঢাকায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদ হোসেন মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, মামলার তদন্তভার উপপরিদর্শক (এসআই) রাজা মিয়াকে দেওয়া হয়েছে।
মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, সাবেক হুইপ ইকবালুর রহিম, সাবেক সংসদ সদস্য শিবলী সাদিক ও মনোরঞ্জন শীল গোপালসহ ৮৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাত ৩০০ থেকে ৩৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এজাহারনামীয় উল্লেখযোগ্যদের মধ্যে আরও রয়েছেন সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ইমদাদ সরকার, বীরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবু হুসাইন বিপু, বিরল উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান বাবু, খানসামা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান লায়ন চৌধুরী, বিরল পৌরসভার সাবেক মেয়র সবুজার সিদ্দিক সাগর, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মমিনুল ইসলাম ছাড়াও বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।
মামলার এজাহারে মোছা. রাশেদা খাতুন উল্লেখ করেন, গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন যখন তুঙ্গে তখন হাজার হাজার ছাত্র জনতার স্বৈরাচারবিরোধী মিছিলে আমার ছেলে আশরাফুল আলম (৩৪) অংশগ্রহণ করে। ওই দিন বেলা ১২টায় মিছিলটি দিনাজপুর সদর হাসপাতাল মোড়ে এলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল, সাবেক নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর সুপরিকল্পিত ও প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে মিছিলের ওপর হামলা চালায়। এতে শত শত ছাত্র-জনতা গুরুতর জখম হয়। এতে আশরাফুল আলমের শরীরের বিভিন্ন অংশে ৭টি গুলি বিদ্ধ হয়। এর মধ্যে তার ডান চোখ গুলিবিদ্ধ হয়ে চিরতরে দৃষ্টিশক্তি হারায়। তাকে প্রথমে দিনাজপুর সদর হাসপাতাল ও পরে দিনাজপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তাকে দিনাজপুরসহ ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে গেলেও তার শরীরে এখনও গুলির স্প্রিন্টার রয়েছে। বর্তমানে সে শরীরে গুলির স্প্রিন্টার নিয়ে ছটফট করছে। যেকোনও সময় তার মৃত্যু হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।