প্রতিনিধি ১২ আগস্ট ২০২৪ , ১:১৪:৫০ প্রিন্ট সংস্করণ
আওয়ামী লীগ দল পুনর্গঠন করতে পারে, এতে কোনো সমস্যা নেই। তবে বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করলে পরিণতি ভালো হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ড. সাখাওয়াত হোসেন।
সোমবার (১২ আগস্ট) ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) আহত আনসার সদস্যদের দেখতে এসে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
বিভিন্ন জায়গায় ক্ষমতাচ্যুতরা আবার সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে, এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, লোক জড়ো করুক আর যাই করুক এমন কিছু করবেন না যাতে আপনাদের জীবন বিপন্ন হয়। কারণ এদেশের পাবলিক এখনো আপনাদের গ্রহণ করতে আসেনি। আমি বরং মনে করি আপনারা আপনাদের পার্টি রিঅর্গানাইজড করেন। পার্টির অনেক অবদান আছে বাংলাদেশে। এটা আমরা ডিনাই করতে পারি না। পার্টিকে রিঅর্গানাইজড করেন, একটা পলিটিক্যাল পার্টির মতো থাকেন। ইলেকশন এলে কনটেস্ট করবেন। জনগণ ভোট দিলে ভোটে যাবেন।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের উদ্দেশে সাখাওয়াত হোসেন বলেন, এদেশের লোক এত তাড়াতাড়ি ভুলে নাই। সময় দেন হয়তো ভুলে যাবে। এত তাড়াতাড়ি ভুলে নাই কারণ যাকে ধরছিলেন নেতা, সেই নেতারা এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছে। যাকে ধরছে তাকে আমরা বাঁচাতে পারছি না। অনেক নেতাকে অনেকে বাঁচিয়েছে। আমরা জানি কে কোথায় আছে। কিন্তু ওটা না করে আপনারা বরং পার্টিকে, এটা অনেক বড় পার্টি, আই হ্যাভ আ লট অব রেসপেক্ট ফর আওয়ামী লীগ। এক সময় আমাদের মতো বাঙালিদের ভরসার জায়গা ছিল এই পার্টি। আপনারা আসুন, যারা রেগুলার (রাজনীতি) করতে চান। এখানে মারামারি করে কোনো লাভ নাই। আরও কিছু লোকের মৃত্যু আমরা চাই না। অলরেডি চারশ থেকে পাঁচশ তারও বেশি মারা গেছে উভয়পক্ষে। পুলিশের এই অবস্থা হয়েছে। আনসারের এই অবস্থা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমরা যদি উসকানি দিতাম তাহলে আপনারা টিকতে পারতেন না, আর্মির ফায়ারে। আমরা আর্মিকে মানা করেছি ডোন্ট ওপেন ফায়ার। কারণ কাকে মারবেন আপনি? আপনারা এই পুলিশকে দিয়ে কাকে মারিয়েছেন? পুলিশকে দিয়ে মারিয়েছেন আপনার সন্তানকে। এটা করবেন না। অনুরোধ করছি প্ররোচণায় আইসেন না। ব্যক্তিগত স্বার্থে আপনারা এত বড় দলকে নষ্ট করবেন না। এটা আমাদের প্রাইড ছিল। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল। নষ্ট করবেন না। এটা নষ্ট করবার কোনো অধিকার আপনাদের নাই। এটা বাংলাদেশের সম্পত্তি।
পাল্টা অভ্যুত্থান প্রসঙ্গে সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘আর এই যদি স্বপ্ন কেউ মনে করে যে এটা করে আবার কাউন্টার রেভ্যুলুশন করে আসবেন। কাউন্টার রেভ্যুলুশন করতে হলে আপনাকে আবার হাজার হাজার লোকের রক্ত বহাইতে হবে। যদি আপনারা সেই দায়িত্ব নিতে চান তাহলে নেন। আমার কিছু করার নেই।’
তরুণ প্রজন্মের প্রশংসা করে তিনি বলেন, এই ইয়াং জেনারেশন, এরাই করেছে, কোনো রাজনৈতিক দল করে নাই। তারা তাদের জীবন দিয়েছে। বুকফুলিয়ে দাঁড়িয়েছে। পুলিশের গুলি খাওয়ার জন্য। দে অল স্মাইলিং৷ এই ইয়াং জেনারেশন যতোদিন আছে, মুখে যতোদিন হাসি আছে, এরা তদ্দিন দৌড়াবে না। আমরা হয়তো দৌড় দেবো। এরা দৌড়াবে না। আমি জানি রাজনৈতিক দলগুলো আমাকে পছন্দ করেন না। তবে সিনিয়র সিটিজেন হিসেবে বলবো, দয়া করে দেশটাকে স্বাধীন রাখেন।
পুলিশের পোশাক পরিবর্তন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পুলিশের লোগো-ড্রেস চেঞ্জ হবে। এটা পুলিশ নিজেরাই বলেছে, এটা কলঙ্কিত করেছে। সবাই যে খারাপ তা তো না। সবাই দানব হয়েছিল, তাতো বলা যায় না। এই পোশাক পরে একদিনও বের হতে চান না। পরে আইজিসহ বললাম, এরা চাইলেও করা যায় না সময় লাগবে। পুলিশের মধ্যে একটা উপলব্ধি হয়েছে তারা তো এখন দেখছে, হোয়াট দে হ্যাভ ডান! ডে হ্যাভ নট ডান। তাদের দিয়ে করানো হয়েছে। কি করানো হয়েছে। দয়া করে দেশটাকে ভাগ করবেন না, নষ্ট করবেন না। অনেক কষ্ট করে স্বাধীনতা হয়েছে। স্বাধীনতা ধরে রাখা খুবই কঠিন। আমি নাম বলতে চাই না, আশেপাশে দেখেন কি অবস্থা।