নালিতাবাড়ী প্রতিনিধি: অমিত চক্রবর্তী ১৪ জুলাই ২০২৪ , ৫:৪৬:২০ প্রিন্ট সংস্করণ
ফেইসবুকে পরিচয় অতঃপর প্রেম ভালোবাসা এবং এক পর্যায়ে পিতামাতার মতামতের বিরুদ্ধে গিয়ে নিজের ভালোবাসার মানুষকে প্রাধান্য দিয়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে সংসারে ঢুকেই যৌতুকের চাপ সহ্য করতে না পেরে ৭ পৃষ্ঠার চিরকুট লিখে গলায় ওড়না পেচানো ঝুলে থাকা জান্নাতুল ফেরদৌসী সুমাইয়া (১৯) নামের এক গৃহবধূ লাশ মিলেছে।
শনিবার (১৩ জুলাই) রাত দশটার দিকে শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার রামচন্দ্রকুড়া ইউনিয়নের বিশগিরি পাড়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
সুত্রমতে, গত ৮ মাস আগে ফেইসবুকে পরিচয়ের মাধ্যমে প্রেমে আবদ্ধ হয়ে শেরপুর সদর উপজেলার সাপমারী এলাকার শিপন নামের এক যুবককের সঙ্গে বিয়ে হয় নালিতাবাড়ী উপজেলার রামচন্দ্র কুড়া ইউনিয়নের আবু বক্কর সিদ্দিকের কন্যা জান্নাতুল ফেরদৌসী সুমাইয়ার।সুমাইয়ার বিয়েটি তার অভিভাবকের অসম্মতিতে হওয়ায় মেনে নিচ্ছিল না স্বামী শিপনের পরিবার৷ এ নিয়ে স্বামী স্ত্রী ও পরিবাবের লোকজনদের মধ্যে যৌতুক নিয়ে প্রায়ই ঝগড়াঝাটি লেগে থাকত। এমনকি শিপন যৌতুকের ৮ লাখ টাকার জন্য সুমাইয়াকে নানাভাবে শারীরিক নির্যাতনও করতো। এসব বিষয় নিয়ে রাগারাগি করে গত রোজার ঈদের সময় সুমাইয়া তার বাবার বাড়িতে চলে এসে থাকতে থাকেন। শনিবার রাতে সুমাইয়া মনের ক্ষোভে ৭ পৃষ্ঠার একটি চিরকুট লিখে শয়নকক্ষে গলায় ওড়না পেচানো লাশ মিলেছে।
চিরকুটে সুমাইয়া লিখেন, বিয়ের গোসল টাও পেলাম না। শেষ গোসল টাও পাব না। জানাযাও পাব না। আমার ঠিকানা হবে জাহান্নাম। অনেক ভালোবাসি তোমাকে শিপন। কিন্তু তুমি শেষ পর্যন্ত তোমার সাথে থাকতে দিলা না। আল্লাহ যেনো তোমাদের শাস্তি দেয় শিপন,তোমাকে আমি অভিশাপ দিয়ে গেলাম।
তিনি আরো লিখেন, আমি চাইলে দ্বিতীয় বিয়ে করে জীবনটা ভালোভাবে চালাতে পারতাম। কিন্তু আমি চাই না দ্বিতীয় কেউ আমার শরীলটা ভোগ করুক।
বাবা মাকে উদ্দেশ্য করে সুমাইয়া লিখেন, তোমরা মনে কষ্ট নিও না। শিপনকে সুখে রাখার জন্য আমি চলে যাচ্ছি। আমার মুখ তাকে দেখতে দিও না। আমার শরীলটা কাটতে দিওনা। কমি কষ্ট পাব।
বিষয়টি নিশ্চিত করে নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল আলম ভুঁইয়া জানান, নিহত সুমাইয়ার মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। মৃতদেহের পাশেই ০৭ পৃষ্ঠার একটি চিরকুট পাওয়া গেছে যা ধারণা করা যাচ্ছে আত্মহত্যার আগে সুমাইয়া নিজ হাতে এটি লিখেছেন। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শেরপুর জেলা হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। একইসাথে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।