যশোর প্রতিনিধি ৩০ জুন ২০২৪ , ১১:৪৬:৩৪ প্রিন্ট সংস্করণ
যশোরের মণিরামপুরে হিজড়া মঙ্গলী খাতুন পলির বাড়িতে চুরি করার সময় দেখে ফেলায় প্রথমে ধস্তাধস্তি এবং পরে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে পলির প্রেমিক কুখ্যাত চোর রমজান হোসেন বাবু।
আটক বাবু মণিরামপুর উপজেলার কামালপুর গ্রামের আলী আহমেদের ছেলে।
রোববার দুপুরে যশোর ডিবি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) বেলাল হোসাইন।
আটকের পর হত্যার ঘটনায় ব্যবহৃত চাপাতি এবং হত্যার পর লুট করা সোনার গহনা, নগদ ১ হাজার ২শ টাকা, বাবুর ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও হত্যাকান্ডের শিকার পলির রক্তমাখা কাপড়ের অংশ বিশেষ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গত শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে যশোর শহরতলীর মুড়লী মোড় এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়।
এদিকে আটক রমজান আদালতে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে আসামি রমজান হোসেন ওরফে বাবু একজন কুখ্যাত চার ও মাদকসেবী। তার বিরুদ্ধে একাধিক চুরি ও মাদক মামলা আছে। নিহত তৃতীয় লিঙ্গের মঙ্গলী খাতুনের সাথে আসামি রমজানের দীর্ঘদিনের সম্পর্ক ছিল। ঘটনার দিন চুরির পরিকল্পনা করে বাড়িতে যায় ঘাতক রমজান। গভীর রাতে পলির বাড়িতে চুরি করার সময় টের পেয়ে যায় পলি। এ সময় তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে ঘরে থাকা ধারালো চাপাতি দিয়ে গলায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে পলিকে হত্যা করে। এরপর তার ঘরে থাকা সোনার কানের দুল, নগদ ২ হাজার ২৫০ টাকা চুরি করে পালিয়ে যায় রমজান।
পরে ২৮ জুন সন্ধ্যা রাত ৭টার সময় মণিরামপুরের মাছনা মোড়লপাড়া গ্রামে মঙ্গলী খাতুন পলির বসতঘরের বারান্দা থেকে গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে মণিরামপুর থানা পুলিশ। এই ঘটনায় নিহতের ভাই মিজানুর রহমান একটি মামলা দায়ের করেন। যশোর ডিবি পুলিশের একটি টিম হত্যাকাণ্ডের তদন্তে নেমে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঘটনায় জড়িত অপরাধীকে শনাক্ত করে।
এরপর শনিবার বিকাল সাড়ে ৬টার দিকে যশোর শহরতলীর মুড়লী মোড় থেকে রমজান হোসেন ওরফে বাবুকে আটক করে পুলিশ। এরপর তার কাছ থেকে পলির ঘর থেকে চুরি করা সোনার আলংকার ও আসামীর ব্যবহৃত মোবাইল উদ্ধার করা হয়। পরে রমজানের স্বীকারোক্তি মোতাবেক তার বসতবাড়ি থেকে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ধারালো চাপাতি, ঘটনাস্থল থেকে চাপাতির রক্তমাখা কাপড় উদ্ধার করা হয় বলে জানান এএসপি বেলাল হোসাইন।
এদিকে রোববার দুপুরে আটক রমজানকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। সে এই হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার দালাল ওই জবানবন্দি ১৬৪ ধারায় রেকর্ড করেন।