জীবনযাপন

ফ্রিল্যান্সিং করে বছরে মেহেদির আয় ১২-১৫ লক্ষ টাকা

  প্রতিনিধি ৩১ মার্চ ২০২৪ , ২:০৩:১৪ প্রিন্ট সংস্করণ

ফ্রিল্যান্সিং করে বছরে মেহেদির আয় ১২-১৫ লক্ষ টাকা
ছবি : সংগৃহীত

ফ্রিল্যান্সিংয়ে স্বাবলম্ভি মেহেদী হাসান। তিনি এখন তরুন উদ্যোক্তা।

তাঁর বছরে আয় প্রায় ১২-১৫ লক্ষ টাকা। শুধু নিজে নন, প্রত্যন্ত এলাকা থেকে
তিনি ফ্রিল্যান্সিংয়ে অন্যদেরও প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছেন এবং তাঁর দেখানো পথে
হেঁটে এলাকার বারোশোরও বেশি তরুন তরুনী স্বাবলম্ভি হয়েছে। এখন তাঁদের
অনেকের মাসিক আয় ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা। মেহেদী হাসানের বাড়ি
ময়মনসিংহের জেলার ফুলবাড়িয়ার তেলীগ্রামে। হাসানের বাবা মারা যাওয়ার পর
সহায় সম্বলহীন হয়ে পড়েছিল পুরো পরিবার। প্রতিনিয়ত অভাব আর অনটন
আষ্টেপৃষ্ঠে ধরে হাসানের পরিবারকে। এ সময় কোনো কিছু করার প্রবল ইচ্ছা তাকে
তাড়া করে ফেরে। তখনই কিছু করার ইচ্ছে থেকে ঝুঁকে পড়েন ইন্টারনেটে। সারাদিন
গুগল ও ইউটিউবসহ বিভিন্ন সাইট ঘেটে ঘেটে ফ্রিল্যান্সিরংয়ের ধারণা রপ্ত করতে
থাকেন হাসান। 2016 সালে ইন্টারনেটে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করেন। শুরুর অভিজ্ঞতাটা
খুব ভালো ছিলনা। দীর্ঘ ছয় বছরের কঠোর পরিশ্রমের পরে এখন তিনি সফল। তরুন
এই উদ্যোক্তা হাসান বলেন চাকুরীর পিছনে না ছুটে বেকারত্ব দূরীকরনে
ফ্রিল্যান্সিং ভূমিকা রাখতে পারে। বেকারত্ব একটা অভিশাপ। বেকারত্বের অভিশাপ
থেকে মুক্তি পেতে এ প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের ফ্রিল্যান্সিং শেখা উচিত। পড়ালেখার
পাশাপাশি নিজেরা কিছু করতে চাইলে ফ্রিল্যান্সিং হতে পারে সম্ভাবনার অন্যতম
ধার। এমনকি প্রতিদিন 8-10 ঘন্টা ফ্রিল্যান্সিং করে বেকারত্বও ঘোচানো সম্ভব।

ওয়াল্ড ভিশন বাংলাদেশে গবেষণা প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশের ৪
কোটি ৪০ লাখ তরুনদের প্রতি ১০ জনের একজন বেকার। প্রতিবছরই
বিশ্ববিদ্যালয় পেরোনো হাজার হাজার শিক্ষার্থী মনের মত চাকুরী না পেয়ে বেকার
হয়ে বসে আছেন। ফলে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। বাংলাদেশ
তথ্য প্রযুক্তি অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী প্রতিবছর ফ্রিল্যান্সররা ১০কোটি
ডলার আয় করে থাকেন। শ্রমব্যয় কম থাকায় বিশ্বের আউটসোসিং বাজারে
গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান তৈরি করতে পেরেছে বাংলাদেশ। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে
বহু বিভাগীয় গবেষণা ও শিক্ষাদান বিভাগ অক্সফোর্ড ইন্টারনেট ইনস্টিটিউট
(ওআইআই) এর এক গবেষণায় প্রকাশিত হয়েছে যে, অনলাইন শ্রমিক সরবরাহে
বাংলাদেশের অবস্থান এখন বিশ্বের দ্বিতীয় । বাংলাদেশে ফ্রিল্যান্সার এর সংখ্যা
বিশ্বের ১৬ শতাংশ।

বাণিজ্য বিষয়ক পত্রিকা ফোর্বস এর তথ্যমতে ফ্রিল্যান্সিং থেকে আয়ে
এগিযে থাকা শীর্ষ ১০ দেশের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ। ফ্রিল্যান্সিং আয়ে বাংলাদেশ
এর অবস্থান অ্ষ্টম এবং বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ২৭ শতাংশ। বিশ্বে বছরে এক
ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের বাজার রয়েছে আউটসোসিংয়ে, যেখানে বাংলাদেশে এই
খাতে আয় ১ বিলিয়ন হলেও সম্ভাবনা আছে ৫ বিলিয়ন ডলারের। কিন্তু এই ৫
বিলিয়ন ডলার আয় এর লক্ষ্য পূরণ করতে ফ্রিল্যান্সারে সংখ্যা ৫গুন বৃদ্ধি করতে
হবে। সেই ক্ষেত্রে নারী পুরুষ উভয়কে এগিয়ে আসতে হবে।

যুব সমাজের বিশাল জনসংখ্যার এশিয়ার কয়েকটি দেশগুলোর মধ্যে
বাংলাদেশ একটি । এদেশের ১৬৩মিলিয়ন লোকের মধ্যে প্রায় ৬৫% মানুষ পঁচিশ
বছরের কম বয়সি। এই বিশাল তরুন ও শক্তিশালী মানব সম্পদ এখনো
প্রতিযোগিতামূলক বৈশ্বিক বাজারে সমৃদ্ধ হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞানের
অভাব রয়েছে। যদিও ক্যারিয়ার হিসেবে ফ্রিল্যান্সিং গত কযেক বছরে বেশ
জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। হাজার হাজার বাংলাদেশের তরুন এই সুযোগটি কাজে
লাগাতে তাদের সহায়তা করার জন্য যথাযথ প্রশিক্ষণ এবং সরকারি সহায়তার
প্রয়োজন। আমাদের আইটি সেক্টর এবং আইটি উন্নয়নের উত্থানের কারণে
বাংলাদেশে আউটসোসিং বেড়েছে। দেশের অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে সরকারকে এই
খাতে জোরদার হতে হবে যা প্রচুর বিদেশি রেমিট্যান্স উৎপাদন করতে পারবে এবং
ফ্রিল্যান্সিং বাংলাদেশের অর্থনীতিকে প্রভাবিত করবে এবং অর্থনীতির
সার্থকতা অব্যাহত রাখবে বলে ধারনা করা যায়।

ডিজিটালাইজেশন আগমনের সাথে সাথে বাংলাদেশের মতো অনেক উন্নয়নশীল
দেশ ডিজিটাল অর্থনীতিতে মনোনিবেশ করছে। একটি দেশের অর্থনীতির
ডিজিলাইজেশন কেবল তার শিল্পে নতুনত্বকে চালিত করে না, এটি গার্হস্থ্য
কর্মসংস্থানের সুযোগকেও উন্নীত করে এবং দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াতে
সক্ষম করে। ব্যয় এবং ঝুঁকি হ্রাসের সন্ধানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য
এবং অস্ট্রেলিয়ার মতো উন্নত দেশগুলোর অনেক বড় বড় কর্পোরেশন বাংলাদেশসহ
নানা দেশ থেকে আইটি আউটসোসিংয়ের দিকে ঝুঁকছে, যা বাংলাদেশের
ফ্রিল্যান্সিংকে আরেক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যেতে সক্ষম হচ্ছে। বৈশ্বিক
ডিজিলাইজেশন ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নের সুবাদে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ এখন ডিজিটাল আউটসোর্সিংয়ে বিশ্বের অন্যতম দেশ হিসেবে পরিচিত

হচ্ছে। জাতিসংঘের বানিজ্য ও উন্নয়ন বিষয়ক সংস্থা ডিজিটাল ইকোনমি রিপোর্ট-
2019 তথ্য মতে, বৈশ্বিক এ খাতে বাংলাদেশের প্রায় সাড়ে ছয় লাখ ফ্রিল্যান্সার
কাজ করছেন। যাদের মাধ্যমে প্রতিবছর দেশে ১০ কোটি ডলারের বেশি বৈদেশিক
মুদ্রা আসছে। একটি দেশের অর্থনৈতিক ডিজিলাইজস শুধু পণ্য ও সেবার উদ্ভাবনই
বাড়ায় না, সাথে সাথে অভ্রন্তরীণ বাজারে বিপুল কর্মসংস্থান তৈরি করে ও
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে জোরালো করে।

ফ্রিল্যান্সিং হলো মুক্ত পেশা। ঘরে বসেই পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের প্রতিষ্ঠানের
কাজ করে অর্থোপার্জন করা যায়। কাজ করার জন্য প্রয়োজন হয় না কোনো
অফিসের । প্রয়োজন শুধু ইন্টারনেট সংযোগ। তাই বর্তমানে সারা বিশ্বের তরুন-
তরুনীদের কাছে ফ্রিল্যান্সিং বহুল ভাবে জনপ্রিয়্ তাই প্রতিনিয়ত এর ক্ষেত্র ও
প্রসারিত হচ্ছে। বিশ্বের বড় বড় কোম্পানী এখন তাদের কাজগুলো অফিসের মধ্যে
সীমাবদ্ধ না রেখে ছড়িয়ে দিচ্ছে ফ্রিল্যান্সিং মাকের্ট প্লেসে। এতে কোম্পানীগুলো
কাজের জন্য পাচ্ছে দক্ষ কর্মী এবং কর্মীরাও অন্য দেশ থেকে রেমিট্যান্স আয়ের
মাধ্যমে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হতে পারছে। বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিংয়ের জন্য
জনপ্রিয় ওয়েবসাইট হচ্ছে আপওয়ার্ক, ফাইভার, ফ্রিল্যান্সার ডটকম, পিপল পার
আওয়ার, নাইনটি নাইন ডিজাইনস, গুরু ডটকম, বিল্যান্সার ডটকম ইত্যাদি। এসব
ওয়েব সাইটে গ্রাফিক্স, ডিজাইন, ডেটা এন্ট্রি ডিজিটাল মাকেটিং কনটেন্ট রাইটিং,
কম্পিউটার প্রেগ্রামিং অ্যাফিলিয়েট মাকেটিং এসইও, ওয়েব ডিজাইন, ওয়েব
ডেবেলপমেন্ট ইত্যাদি কাজ করে যে কোনো চাকুরী থেকে বেশি অর্থোপার্জন করার
সুযোগ রয়েছে। বর্তমানে যে জাতি প্রযুক্তির দিক দিয়ে যত বেশি দক্ষ , সে জাতি
তত বেশি উন্নত। তাই আমাদের দেশের বিশাল জনগোষ্টিকে কম্পিউটারে দক্ষতা
বৃদ্ধি করে কাজের লাগানো যেতে পারে। সরকার এ ব্যাপারে অগ্রণী ভূমিকা পালন
করছে। আর্থ-সামাজিক ও জাতীয় অর্থনীতিতে বাংলাদেশের তরুনরা যাতে ভূমিকা
রাখতে পারে সে জন্য সরকার বিভিন্ন নীতিমালা গ্রহণ করেছে। তবে আমাদের দেশে
ফ্রিল্যান্সিংয়ে কাজ করার ক্ষেত্রে অনেক প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হয়।
প্রথমত, ডিভাইসজনিত সমস্যা। ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য যে ধরণের ডিভাইসের
প্রয়োজন হয় তা অনেকের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। তাই অনেকের ইচ্ছে থাকার পরও
ডিভাইজের কারণে কাজ করতে পারেনা। তারপরও বলতে হয় বাংলাদেশে
ফ্রিল্যান্সারদের সামাজিক মর্যাদা নেই, তাদের কোনো রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতিও
নেই।ফ্রিল্যান্স কাজ স্ব-নিযুক্ত পেশাদারদের একটি নির্দিষ্ট ফি বা হারে তাদের
পরিষেবাগুলি সম্পাদন করতে দেয়। যদিও কিছু ফ্রিল্যান্স কর্মীরা পূর্ণ-সময়ের
ভিত্তিতে এই ধরনের কাজ সম্পন্ন করে, এটি কর্মীদের জন্য আয় উপার্জনের
একটি সহজ উপায়ও হতে পারে। ফ্রিল্যান্সিং কত প্রকার ও ফ্রিল্যান্সিং কাজ কি
কি যেগুলো করে আপনিও সফল হতে পারেন এগুলো আলোচনা করবো। যারা কঠোর
কর্পোরেট পরিবেশে ভালো করেন না তাদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং আরও বেশি জনপ্রিয়
হয়ে উঠছে! শুধুমাত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫৩ মিলিয়ন মানুষ ফ্রিল্যান্সিং

করছেন! এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় কর্মশক্তির প্রায় 34%! বর্তমানে
ভারত ও বাংলাদেশের মানুষ বিশাল ভাবে ফ্রিল্যান্সিং দিকে ঝুকে যাচ্ছে!
ফ্রিল্যান্সিং কত প্রকার– ফ্রিল্যান্স ট্রান্সলেটর, ডেভেলপার (কোডার,
প্রোগ্রামার), লেখক বা পিরাইটার, ফ্রিল্যান্স ডিজাইনার, ফ্রিল্যান্স সোশ্যাল
মিডিয়া ম্যানেজার, মার্কেটিং প্রফেশনাল, মোবাইল অ্যাপ ভেলপমেন্ট,
সফটওয়্যার ডেভেলপার, কাস্টমার সার্ভিস, ফ্রিল্যান্স ক্যাপশনার ও
হিসাবরক্ষক (একাউন্টেন্ট)

আশার কথা হলো বর্তমান সরকার দক্ষ ফ্রিল্যান্সার তৈরি করতে ফ্রি
কোর্সের ব্যবস্থা করছে। সরকারি অর্থায়নে লার্নিং এন্ড আর্নিং ফ্রি কোর্স
করে দক্ষ ফ্রিল্যান্সারর হওয়ার পাশাপাশি কোর্স শেষে নগত অর্থ ও
সাটিফিকেটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সরকার ২০ হাজার নারীসহ ৫৫ হাজার
ফ্রিল্যান্সার তৈরির উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। তথ্য
ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় লার্নিং অ্যান্ড আর্নি ডেভলপমেন্ট শীর্ষক
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে এটির অনুমোদন
প্রকল্পটি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।
সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সি আর আই) এর চেয়ার পারসন এবং
প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন,
নিজেদের পরিশ্রম, মেধা দিয়ে নিজেদের সমস্যা নিজেরাই সমাধান করবো। নিজের
মধ্যে যদি আত্মবিশ্বাস ও দেশপ্রেম থাকে তাহলে নিজের দেশের মানুষের জন্য সব
কিছু করা সম্ভব। আমাদের তরুন তরুনীরা নিজের প্রচেষ্টায় কারও কাছ থেকে হাত
না পেতে নিজের মেধায় নিজের চিন্তাধারায় অনেক কিছু করতে পারে।

ফ্রিল্যান্সিংকে খাত হিসেবে আরো সফল করতে সরকারি উদ্যোগই বেশি
প্রয়োজন। ২০০৮ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশের ‘রোডম্যাপ’ ঘোষণার দশ বছর পর
সরকার ‘আমার গ্রাম-আমার শহর, সুশাসন’ ও তারুণ্যের শক্তি’- এই তিনটি উন্নয়ন
কর্মসূচি হাতে নেয়। তাতে ডিজিটাল বিপ্লবের বাস্তবায়ন আরো ‘গতিশীল’ হয়েছে।
এই রোডম্যাপ অনুযায়ী সরকার ইতিমধ্যে নানা রকম উদ্যোগ নিয়েছে। এর মধ্যে
রয়েছে সরকারি ভাবে প্রশিক্ষণের সুযোগ। আইসিটি মন্ত্রনালয়ের অধীনে লার্নিং
এন্ড আর্নিং প্রকল্পের মাধ্যমে সারাদেশব্যপী চল্লিশ হাজার প্রশিক্ষণার্থীকে

প্রশিক্ষণ দেওয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে সরকার পাঁচ
লক্ষ ফ্রিল্যান্সারদের স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনা গ্রহন করেছে। ইতিমধ্যে,
আইসিটি বিভাগ এবং বাংলাদেশ ফ্রিল্যান্সার ডেভলপমেন্ট সোসাইটি
ফ্রিল্যান্সারদের ডাটাবেইজ তৈরি করেছে। এছাড়া সরকার তথ্য প্রযুক্তি সেবা
নিশ্চিত করতে প্রতি জেলায় আইসিটি পার্ক গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে। দেশের
ফ্রিল্যান্সারদের সরকারি কাজ করার সুযোগ দিতে একটি মার্কেটেপ্লেস তৈরির
উদ্যোগ নেয়া হয়েছে । যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর এবং মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরও এই
কার্যক্রমে নানান প্রশিক্ষণ ও ভাতার ব্যবস্থা করছে। সরকারিভাবে বেসরকারি
প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান গুলোকেও নানা ভাবে সাহায্য করছে সরকার।

স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একবার তার
বক্তৃতায় বলেছিলেন, ‘আমার দেশে সম্পদ আর সেই সম্পদ হলো আমার দেশের
মানুষ’ আমাদের দেশে এত জনবল থেকেও তাঁদেরকে ঠিকমত কাজে লাগানো যাচ্ছেনা।
এর কারণ হলো, দক্ষ জনশক্তির অভাব এবং বেকারত্বের হার আশঙ্কাজনকভাবে
বৃদ্ধি পাওয়া। বিবিএসের সর্বশেষ তথ্য মতে, দেশে এখন ২৬ লক্ষ ৩০ হাজার মানুষ
বেকার এই সংখ্যাকে মোটেও সহজ করে দেখার সুযোগ নেই। দক্ষ জনশক্তি একটি
দেশের জন্য যেমন আশীর্বাদ, তেমনি বেকার জনগোষ্ঠী দেশের জন্য অভিশাপ।
আমাদের প্রধান চ্যালেঞ্জ হওয়া উচিত এই বেকার জনগোষ্ঠিকে দক্ষ
জনগোষ্ঠিতে পরিণত করা । আমাদের দেশের যত বেকার আছে তার সিংহভাগই
গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করা। এই বেকারত্বের প্রবনতা শিক্ষিত মানুষের মধ্যে বেশি।
অথচ এই শিক্ষিত জনগোষ্ঠিক চালকের আসনে থাকার কথা ছিল, কিন্তু বাস্তব
পরিস্থিতি ভিন্ন। বর্তমান যুগ যেহেতু তথ্য প্রযুক্তির যুগ, তাই দক্ষ জনশক্তি
তৈরি করতে হবে এবং স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার আসল উদ্দেশ্য অনেকটা সফল ও
বাস্তবায়িত হবে।

লেখক: ইনফরমেশন অ্যাসিস্ট্যান্ট, আঞ্চলিক তথ্য অফিস, ময়মনসিংহ।

আরও খবর

                   

সম্পর্কিত