ডুয়েট প্রতিনিধি: আরমান চৌধুরী ১ জুলাই ২০২৪ , ১১:৫৫:৩৬ প্রিন্ট সংস্করণ
হাবিবুর রহমান
(কম্পিউটার সাইন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, ডুয়েট)
বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শিক্ষা ও শিক্ষকের সমন্বয় সাধনের সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠান। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা উপকরণের উন্নতির পাশাপাশি শিক্ষা ব্যবস্থারও যথাযথ উন্নতি হওয়া প্রয়োজন। আমাদের দেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় যুগোপযোগী শিক্ষা ব্যবস্থার অবদান অনস্বীকার্য। দেশসেরা গ্রাজুয়েট তৈরির জন্য এই শিক্ষা ব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। আমাদের গ্রাজুয়েটরা দেশের সেরা, দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে উঠার জন্য শিক্ষার মানগত উন্নয়নের পাশাপাশি শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি হওয়া প্রতিটি শিক্ষার্থীর একান্ত কামনা। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা ব্যবস্থায় ও শিক্ষক চান ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তা তুলে ধরেছি আমি হাবিবুর রহমান।
ইমাম উদ্দিন সাকিব
(ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, ডুয়েট)
–ডিজিটাল বাংলাদেশ’ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা হোক সবার অগ্রে–
সব কিছু তৈরী হয় মেধাবী শিক্ষার্থীদের দ্বারা, আর মেধাবীদের তৈরি করেন শিক্ষকেরা। উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশ ও ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে । দেশের এই ডিজিটাল এবং স্মার্ট পথচলার ছোঁয়া লেগেছে দেশের ভবিষ্যত গড়ার কারখানা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও। যদিও আমরা বরাবরই প্রযুক্তির সদ্ব্যব্যবহারের চেয়ে অপব্যবহারেই বেশী আগ্রহী ।যার প্রতিফলন আমরা দেখতে পাই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্লাসরূম গুলোতেও। বিশেষ করে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রযুক্তির অযাচিত ব্যবহারের ফলে দেশ পাচ্ছেনা যথাযথ কারিগরি দক্ষতাসম্পন্ন প্রকৌশলী ।
ডিজিটাল প্রযুক্তিতে শিক্ষার নামে প্রজেক্টরের মাধ্যমে বইয়ের পিডিএফের সাহায্যে পড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে গানিতিক ও যৌক্তিক বিষয়গুলোও। এছাড়াও শিক্ষকদের প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে সন্ধ্যাকালীন ক্লাস নেওয়ার প্রবণতা তো আছেই। একজন প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হিসেবে তাই আমাদের চাওয়া থাকবে একজন শিক্ষক ক্লাসে আসার পূর্বেই তিনি মানসম্পন্ন লেকচার শীট তৈরি করবেন এবং ছাত্রদেরকে নির্ধারিত বিষয়ের উপর যথাযথ লেকচার প্রদান করবেন ।
সাইদুল হক
(মেটারিয়্যাল অ্যান্ড মেটালার্জিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, ডুয়েট)
–বাস্তব সমস্যা সমাধান দক্ষতা অর্জন হোক শিক্ষা ব্যবস্থার মূখ্য বিষয়–
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা পদ্ধতি হবে ইন্টারেক্টিভ, প্রানবন্ত। আমি মনে করি আমাদের বিশ্ববিদ্যালগুলোর শিক্ষকদের লেকচার দেওয়ার পর লেকচার টপিকের উপর ক্লাসেই ছাত্রদের কিছু কেস স্টাডি করানো, শুধু হোম ওয়ার্ক না দেওয়া । তাহলে ছাত্ররা বাস্তব সমস্যা সমাধানের দক্ষতা অর্জন করবে, ইনেশিয়েটিভ কিছু করতে আগ্রহী হবে।
মো: আরমান চৌধুরী
(ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, ডুয়েট)
— শিক্ষা ব্যবস্থা হোক জাতি গঠনের সর্বোত্তম সহায়ক–
শিক্ষক জাতি গঠনের কারিগর।একজন শিক্ষক ঠিক একজন কারিগরের মত করে একটা জাতিকে সমৃদ্ধ করতে ব্যাপক ভূমিকা রাখেন। বিশ্ববিদ্যালয় হলো সে কারিগরদের সর্বোচ্চ কর্মশালা।এখানে শিক্ষকরা জাতির জন্য হাতিয়ার তৈরি করে। বাংলাদেশের প্রক্ষাপটে এই হাতিয়ার তৈরির কারখানার বেহাল দশা।এই বেহাল দশা সবচেয়ে বেশি দৃষ্টিগোচর হয় প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে,এখানে ব্যবহারিক জ্ঞানের চেয়ে বেশি তাত্ত্বিক জ্ঞানের ভরাডুবি। ছাত্রদের গেলানো হয় হাজার হাজার গানিতিক সমীকরণ।কিন্তু এই সমীকরনের সঠিক কাজ কি? সেই জ্ঞান বেশির ভাগ শিক্ষকেরই অজানা।জানা থাকলেও শিক্ষার্থীদের মত করে বুজানোর চেষ্টা তাদের থাকে না।
বেশিরভাগ শিক্ষক ব্যবহারিক কাজেও অদক্ষ।যার জন্য দেশে লক্ষ লক্ষ প্রকৌশলীর মাঝেও নেই একজন নতুন উদ্ভাবক,নেই কোন দক্ষ প্রকৌশলী। একজন প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হিসেবে তাই আমাদের চাওয়া থাকবে। একজন শিক্ষক ক্লাসে আসার পূর্বেই তিনি মানসম্মত পড়ানোর কৌশল এবং যে সাবজেক্ট পড়াবে সেই সাবজেক্ট সম্পর্কে বিশদ জ্ঞান আর ক্লাস পূর্ব প্রস্তুতি। তাছাড়া একজন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের তাত্বিক,ব্যবহারিক জ্ঞানের সমন্বয় থাকতে হবে।
ইকরামুল হক
(কম্পিউটার সাইন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, ডুয়েট)
— বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদেরকে হতে হবে ডায়নামিক, জ্ঞান ও তার বাস্তব প্রয়োগে পারদর্শী–
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দেশ গড়া প্রকৃত কারিগর রূপে গড়ে তোলার দায়িত্ব হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের। সুতরাং শিক্ষকদেরকে হতে হবে ডায়নামিক, জ্ঞান ও তার বাস্তব প্রয়োগে পারদর্শী। ক্লাসে শুধু নির্ধারিত সিলেবাস শেষ করার প্রবনতা পরিহার করে শিক্ষার্থীরা কতটুকু অর্জন করতে পারছে এবং কিভাবে উপস্থাপন করলে শিক্ষার্থীরা আরো ভালো বুঝতে পারবে প্রতিটি শিক্ষককে সেটা অনুধাবন,অনুশীলন করা। প্রত্যেকটা বিষয়ে পাঠদানের পূর্বে সেটার থিওরিটিক্যাল ব্যাকগ্রাউন্ড, অবজেক্টিভ এবং আউটকাম কি হবে সেটার ধারনা দেওয়া। শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের মাঝে সম্মানের অবস্থানটা অটুট রেখে বন্ধুত্বসুলভ সম্পর্ক স্থাপন করা যেন শিক্ষার্থীরা কোনো সমস্যায় হতাশ না হয়ে শিক্ষকদের পরামর্শে সমস্যার সমাধান করতে পারে । সর্বোপরি শিক্ষকদের পাঠদান হবে আনন্দমুখর পরিবেশে জ্ঞানার্জনের একমাত্র উৎস।