প্রতিনিধি ৩০ এপ্রিল ২০২৪ , ১১:২৪:৩৯ প্রিন্ট সংস্করণ
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় বৈশাখী মেলার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে শরিফ খান(২৩)‘কে পিটিয়ে হত্যার চাঞ্চল্যকর মামলায় আসামী শ্যামল(২০)‘কে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১৪, সিপিসি-২, কিশোরগঞ্জ ক্যাম্প।
১। র্যাব তার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে জঙ্গি ও সন্ত্রাস, মাদক, অস্ত্র, অপহরণ, হত্যা, নারী নির্যাতন ও ধর্ষণসহ বিভিন্ন প্রকার অবৈধ কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে আপসহীন অবস্থানে থেকে কাজ করে যাচ্ছে যা দেশের সর্বস্তরের জনসাধারণ কর্তৃক ইতোমধ্যেই বিশেষভাবে প্রশংসিত হয়েছে। র্যাব-১৪ এর দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় বিভিন্ন হত্যা সংক্রান্ত অপরাধ কর্মকান্ড দমনের লক্ষ্যে র্যাব ফোর্সেস অত্যন্ত পেশাদারিত্বের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে হত্যার মত জঘন্য কাজ থেকে সমাজ তথা দেশকে বাঁচাতে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে আসছে।
২। গত ২৫/০৪/২০২৪ তারিখ রাত অনুমান ০৯.৩০ ঘটিকার সময় নিহত শরীফ খান(২৩) কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া থানাধীন পোড়াবাড়িয়া সাকিনস্থ পোড়াবাড়িয়া স্কুল মাঠ সংলগ্ন মেলা বাজার নামক স্থানে বৈশাখী মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখতে যায়। অনুষ্ঠান চলাকালীন দিবাগত অর্থাৎ ২৬/০৪/২০২৪ তারিখ রাত অনুমান ০১.০০ ঘটিকার সময় অনুষ্ঠানের স্টেজে মেয়েরা গানের তালে তালে নাচতে থাকলে বাদীর ছেলে শরীফ খান ও অন্যান্যদের সাথে নাচতে থাকে। তখন এজাহারনামীয় ০২ নং আসামী সজীব হাসান ভিকটিম শরিফ খান‘কে স্টেজ থেকে বুক বরাবর লাথি মারিয়া মাটিতে ফেলে দেয়। ভিকটিম শরীফ খান তার সঙ্গীও লোকজনসহ স্টেজে উঠে প্রতিবাদ করলে সজীবের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে আয়োজক কমিটি নাচ গান বন্ধ করে দেয় এবং ০২নং আসামী সজীব হাসান মাইকের মাধ্যমে ঘোষণা দিয়ে বলে যে কোষাকান্দার শালাদের ধর কেউ যাতে জান নিয়ে বেঁচে যাইতে না পারে। এই হুকুম পাওয়া মাত্র এজাহারনামীয় ০১নং আসামির হুকুমে ০২নং আসামী সজীব, ধৃত আসামী শ্যামল এবং অন্যান্য আসামিগণ ভিকটিম শরিফ খানকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে ভিকটিমের উপর আক্রমণ চালায়। একপর্যায়ে, আসামিগণ ধারালো ছুরি ও ডাগার দিয়ে ভিকটিম শরীফ খানকে এলোপাথারিভাবে বুক, পিঠ সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে পার(ঘাই) মারিলে সজিব খান গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হয়। অতঃপর অনুষ্ঠানস্থলের লোকজন গুরুতর জখমপ্রাপ্ত অবস্থায় শরিফ খানকে উদ্ধার করে পাকুন্দিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ ভর্তি করালে কর্তব্যরত চিকিৎসক শরীফ খান(২৩)‘কে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শরিফ খান(২৩) একই তারিখ রাত অনুমান ২.৩০ ঘটিকার সময় মৃত্যুবরণ করেন। শরিফ খান(২৩) হত্যার ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রচারিত হলে দেশব্যাপী ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
৩। এ ঘটনায় নিহতের বাবা মোঃ আবুল হোসেন(৫২), পিতা-মৃত জুবেদ আলী, সাং-কোষাকান্দা, থানা-পাকুন্দিয়া, জেলা-কিশোরগঞ্জ বাদী হয়ে কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া থানায় ০১টি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-১৫, তাং-২৭/০৪/২০২৪খ্রি. ধারা-১৪৩/৩২৩/৩২৫/৩২৬/৩০৭/৩০২/৫০৬/১১৪/৩৪ পেনাল কোড ১৮৬০। আসামীরা গ্রেফতার এড়াতে ঘটনার পর পরই এলাকা ছেড়ে বিভিন্ন জায়গায় আত্মগোপনে চলে যায়। উক্ত হত্যাকান্ডের ঘটনায় আসামীদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে র্যাব-১৪, সিপিসি-২, কিশোরগঞ্জ ক্যাম্প গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।
৪। এরই পেক্ষিতে, র্যাবের গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আসামীদের অবস্থান জানার চেষ্টা করে এবং সর্বশেষ কটিয়াদী থানা এলাকায় উক্ত মামলার ০৮নং এজাহারনামীয় আসামীর অবস্থান নিশ্চিত হয়ে ইং ২৯/০৪/২০২৪খ্রি.তারিখ রাত অনুমান ০২:০০ ঘটিকার সময় কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদী থানাধীন বনগ্রাম এলাকা হইতে র্যাব-১৪, সিপিসি-২ কিশোরগঞ্জ ক্যাম্পের একটি চৌকস আভিযানিক দল অভিযান পরিচালনা করে উক্ত মামলার ০৮নং এজাহারনামীয় আসামী শ্যামল(২০), পিতা- আলাউদ্দিন, সাং-পোড়াবাড়িয়া, থানা-পাকুন্দিয়া, জেলা-কিশোরগঞ্জ’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় । উক্ত হত্যার ঘটনায় জড়িত অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারের জন্য র্যাবের অভিযান অব্যাহত আছে।
৫। গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে