প্রতিনিধি ১৮ এপ্রিল ২০২৪ , ২:০৫:৩৩ প্রিন্ট সংস্করণ
ময়মনসিংহের নান্দাইল থানার আলোচিত হত্যা মামলার অন্যতম প্রধান আসামি মোঃ ফরহাদ মিয়া @ খলিল’কে চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৭।
বাংলাদেশ আমার অহংকার এই স্লোগান নিয়ে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে জোড়ালো ভূমিকা পালন করে আসছে। র্যাব সৃষ্টিকাল থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ এর উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতারসহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। র্যাব-৭, চট্টগ্রাম অস্ত্রধারী সস্ত্রাসী, ডাকাত, ধর্ষক, দুর্ধর্ষ চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী ও প্রতারকদের গ্রেফতার এবং বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও মাদক উদ্ধারের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করায় সাধারণ জনগনের মনে আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
নিহত ভিকটিম এনামুল হক এবং ধৃত আসামি মোঃ ফরহাদ মিয়া @ খলিল একই বংশের লোক এবং পাশাপাশি বাড়ীতে বসবাস করতেন। তাদের মধ্যে জমি-জমা সংক্রান্ত বিষয়ে দীর্ঘদিন যাবত পারিবারিক বিরোধ চলে আসছিলো। উক্ত বিরোধের জের ধরে ভিকটিমের পরিবার বাদী হয়ে ধৃত আসামি মোঃ ফরহাদ মিয়া’র পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ সিনিয়র সহকারী জজ আদালত, নান্দাইল, ময়মনসিংহে একটি মামলা দায়ের করেন, মামলা নাম্বর-১১৮/২০২৩ যা বিজ্ঞ আদালতে বিচারাধীন। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৩ মার্চ ২০২৪ইং তারিখ দুপুর আনুমানিক ১৪৩০ ঘটিকায় ধৃত আসামি ফরহাদের নেতৃত্বে ১২/১৫ জনের একটি দল রামদা, বল্লম, লোহার টেডা, লোহার রড ও বাঁশের লাঠি নিয়া অতর্কিতভাবে ভিকটিম এনামুল হকের বসত বাড়ীতে প্রবেশ করে পরিবারের লোকজনকে গালিগালাজ শুরু করে।
এসময় ভিকটিম এনামুল হক গালিগালাজ করার বিষয়ে জানতে চাইলে ধৃত আসামি মোঃ ফরহাদ মিয়া’র হাতে থাকা লোহার টেডা দিয়ে এনামুল হকের ডান বাহুতে সজোরে আঘাত করে। এতে এনামুলে হকের হাত ছিদ্র হয়ে গুরুতর রক্তাক্ত জখম হয়। রক্তাক্ত জখম অবস্থায় এনামুল হক মাটিতে লুটিয়ে পরলে আসামি মোঃ ফরহাদ মিয়া’র সাথে থাকা অন্যান্য সহযোগীরা দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে উপর্যপুরি আঘাত করে। এসময় ভিকটিমের চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে ভিকটিম এবং তার পরিাবরের লোকজনকে হত্যার হুমকি প্রদান করে আসামি মোঃ ফরহাদ মিয়া @খলিল ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় গুরুতর রক্তাক্ত জখম অবস্থায় ভিকটিম এনামুল হককে উদ্ধার করে নান্দাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে একই দিন দুপুর আনুমানিক ১৫৩০ ঘটিকায় মৃত ঘোষণা করেন।
উক্ত হত্যার ঘটনায় ভিকটিমের ভাই বাদী হয়ে ময়মনসিংহ জেলার নন্দাইল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-২০/৮০, তারিখ-১৪ মার্চ ২০২৪ইং,ধারা-১৪৩/৪৪৭/৩২৩/৩২৬/৩০৭/৩০২/৪২৭/৫০৬/(২)/৩৪ পেনাল কোড ১৮৬০।
উক্ত হত্যা মামলার এজাহার নামীয় পলাতক আসামিদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম ব্যাপক গোয়েন্দা নজরদারি এবং ছায়াতদন্ত অব্যাহত রাখে। নজরদারীর এক পর্যায়ে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, উক্ত হত্যা মামলার এজাহার নামীয় ২ নং পলাতক আসামি ফরহাদ মিয়া @খলিল চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুন্ড থানাধীন কদম রসুল বাজার এলাকায় অবস্থান করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৭, চট্টগ্রামের একটি আভিযানিক দল গত ১৬ এপ্রিল ২০২৪ইং তারিখ রাত ২০৩০ ঘটিকায় বর্ণিত এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামি মোঃ ফরহাদ মিয়া @ খলিল (৩৩), পিতা-মৃত আঃ জলিল, সাং ভাটিচারিয়া, থানা-নান্দাইল, জেলা-ময়মনসিংহ’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মূখে আটককৃত আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, সে বর্ণিত হত্যা মামলার এজাহার নামীয় ২ নং পলাতক আসামি এবং মামলা হওয়ার পর হতেই আইন শৃংখলা বাহিনীর নিকট থেকে গ্রেফতার এড়াতে চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে আত্মগোপন করে আসছিল।
গ্রেফতারকৃত আসামি সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল মডেল থানা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।