অপরাধ ডেস্ক ৮ জুলাই ২০২৪ , ৩:১৪:১৬ প্রিন্ট সংস্করণ
গত ০৫/০৭/২৪ খ্রি. দুপুর ১২:৪০ ঘটিকার সময় প্রাপ্ত সংবাদের প্রেক্ষিতে দুপুর ১২:৫০ ঘটিকার সময় কর্ণফুলী থানাধীন চরলক্ষ্যা ০৩ নং ওয়ার্ড খালেক মেম্বরের বাড়ির মহিউদ্দিনের ভাড়া ঘরে একজন গার্মেন্টসকর্মী নাসিমা বেগম (৩৫)-এর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিকভাবে জানা যায়, ভিকটিমের প্রথম ঘরের ছেলে কামরুল হাসান ইমন (১৮) এবং মেয়ে কানিজ ফাতেমা ইমু (১৩)-সহ পার্শ্ববর্তী জনৈক মহিউদ্দিনের ভাড়াঘরের উত্তর পাশের রুমে ভাড়াটিয়া হিসেবে প্রায় ০১ বছর যাবত বসবাস করেন। গত ০৪/০৭/২৪ খ্রি. দিবাগত রাতে ভিকটিমের ২য় স্বামী মোঃ সোলায়মান (৪০) রাত আনুমানিক ০১:০০টার দিকে ভাড়া বাসায় আসে। ভিকটিম তার মেয়েসহ উক্ত বাসায় অবস্থান করছিলেন। মেয়ে ভিতরের রুমে ঘুমিয়ে ছিল। রাতের বেলায় ভিকটিমের ২য় স্বামীর সাথে তার ঝগড়া-ঝাটি হয় এবং ভিকটিমের স্বামী তাকে মারধর করে বলে তার মেয়ে শুনতে পায়। মেয়ে ভয়ে কাউকে কিছু না জানিয়ে ঘুমের ভান করে শুয়ে থাকে। ইতোপূর্বেও ২য় স্বামী বিভিন্ন সময়ে রাতে এসে মৃতাকে মারধর করতো। সকাল আনুমানিক ০৮:০০ টার দিকে ভিকটিমের মেয়ে ঘুম থেকে উঠে দেখে যে, তার মা সামনের রুমে গায়ে কম্বল জড়িয়ে শায়িত অবস্থায় আছে। মেয়ে তার মা ঘুমাচ্ছে মনে করে তাকে ডাকেনি। পরবর্তীতে তার ছেলে কামরুল হাসান ইমন আনুমানিক ০৯:০০ টার দিকে ঘরে এসে তার মাকে মৃত অবস্থায় দেখতে পায়। ছেলেটি আশে-পাশে তার মামা-মামী, নানা-নানুদের ডাকলে তারা রুমে এসে ভিকটিমকে বিছানার উপর শায়িত অবস্থায় পায় এবং স্ট্রোক করে মারা গেছে মনে করে বিছানা থেকে নামিয়ে মৃতদেহ দাফনের ব্যবস্থা করে। পরবর্তীতে তারা মৃতদেহ পর্যবেক্ষণ করে হত্যার বিষয়টি বুঝতে পারে। তারা বিষয়টি আশেপাশের লোকজনকে জানালে ভিকটিমের ভগ্নিপতি মোঃ আলমগীর বিষয়টি ৯৯৯ এর মাধ্যমে কল করে থানায় অবহিত করলে কর্ণফুলী থানা পুলিশ তখনই ঘটনাস্থলে আসে। মৃতদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুতসহ লাশ ময়নাতদন্তের নিমিত্তে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সিএমপির বন্দর বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
পরবর্তীতে সিএমপির বন্দর বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার জনাব শাকিলা সোলতানা মহোদয়ের দিক-নির্দেশনায় এডিসি (বন্দর) জনাব হুমায়ুন রশিদের তত্ত্বাবধানে এসি (কর্ণফুলী জোন) জনাব আসিফ গালিবের নেতৃত্বে অফিসার ইনচার্জ জনাব মোহাম্মদ জহির হোসেন, পিপিএম (বার) ও পরিদর্শক (তদন্ত) জনাব মেহেদী হাসানের সহযোগিতায় এসআই (নি.) আবদুল্লাহ আল নোমান সঙ্গীয় অফিসার ও ফোর্সসহ চট্টগ্রাম জেলার পটিয়া থানাধীন জিরি ইউপিস্থ ০৭ নং ওয়ার্ডের মালিয়ারা গ্রামে গত ০৫/৭/২৪ খ্রি. বেলা আনুমানিক ১৪.০০ ঘটিকা থেকে অভিযান পরিচালনা করে আজ ০৭/৭/২৪ খ্রি. ১৫.০০ ঘটিকার সময় আসামি মোঃ সোলাইমান (৪৫)-কে গ্রেফতার করেন। আসামক ঘটনার পর থেকে উক্ত মালিয়ারা গ্রামে বিভিন্ন বন, জঙ্গল, ডোবার মধ্যে লুকিয়ে ছিল। দীর্ঘ সময় পর্যবেক্ষণ করে আসামিকে গ্রেফতার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি তিনটি বিবাহ করে বলে স্বীকার করে। ২০১৭ সালে মৃত নাসিমা বেগমের সাথে ধৃত আসামির সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। বিয়ের পর থেকে ধৃত আসামি মাঝেমধ্যে রাতে গোপনে ভিকটিমের নিকট আসত এবং সকালে চলে যেত। ঘটনার রাতে ধৃত আসামি তার ২য় স্ত্রীকে পূর্বে চাওয়া যৌতুকের ১,০০,০০০/- (এক লক্ষ টাকার) জন্য চাপ প্রয়োগ করে। ভিকটিম টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করে। একপর্যায়ে ভিকটিম নাসিমা বেগমকে মারধর করে গলায় দুই হাত দিয়ে চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে পালিয়ে যায়।