প্রতিনিধি ৭ এপ্রিল ২০২৪ , ২:১০:৪৯ প্রিন্ট সংস্করণ
*২০০৯ সালের বহুল আলোচিত শেরপুরের শ্রীবরদী থানার চাঞ্চল্যকর সেনাসদস্য হত্যা মামলার মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামী মোঃ বাবুল মিয়া(৪০)‘কে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১৪, সিপিসি-১, জামালপুর ক্যাম্প।*
১। র্যাব তার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে জঙ্গি ও সন্ত্রাস, মাদক, অস্ত্র, অপহরণ, হত্যা, নারী নির্যাতন ও ধর্ষণসহ বিভিন্ন প্রকার অবৈধ কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে আপোষহীন অবস্থানে থেকে কাজ করে যাচ্ছে যা দেশের সর্বস্তরের জনসাধারণ কর্তৃক ইতোমধ্যেই বিশেষ ভাবে প্রশংসিত হয়েছে। র্যাব -১৪ এর দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় বিভিন্ন হত্যা সংক্রান্ত অপরাধ কর্মকান্ড দমনের লক্ষ্যে র্যাব ফোর্সেস অত্যন্ত পেশাদারিত্বের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে হত্যার মত জঘন্য কাজ থেকে সমাজ তথা দেশকে বাঁচাতে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে আসছে।
২। এখানে উল্লেখ্য যে, ভিকটিম বটন কান্তি বড়ুয়া, সাং-আনোয়ারা, থানা-কোতয়ালী, জেলা-চট্টগ্রাম একজন সেনা সদস্য ছিলেন। ভিকটিম সেনাবাহিনী চাকরি করাকালে সপরিবারে ঢাকার মাটিকাটা ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় বসবাস করতেন। আসামী মোঃ বাবুল মিয়া(৪০), পিতা-আলী হোসেন, সাং-খৈলকুড়া, থানা-ঝিনাইগাতী, জেলা-শেরপুর ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের মাটিকাটা এলাকায় সবজির ব্যবসা করতেন। ভিকটিম বটন কান্তি বড়ুয়া আসামী মোঃ বাবুল মিয়ার সবজি র দোকানে সবজি ক্রয়ের সুবাদে আসামী মোঃ বাবুল মিয়ার সাথে পরিচয় হয়। ভিকটিম বটন কান্তি বড়ুয়া ও আসামী মোঃ বাবুল মিয়ার মধ্যে একটা সখ্যতা গড়ে উঠে। সখ্যতার একপর্যায়ে ভিকটিমের স্ত্রীর গর্ভে পুরুষ সন্তান ধারণ না হওয়ার বিষয়টি আসামী মোঃ বাবুল মিয়াকে জানায়। অতঃপর ভিকটিম বটন কান্তি বড়ুয়া‘কে আসামী মোঃ বাবুল মিয়া জানায় যে, তার পরিচিত শেরপুর জেলার শ্রীবরদী থানাধীন হাবিবুর রহমান নামের একজন ভালো কবিরাজ আছে। উক্ত কবিরাজ শেরপুর জেলার শ্রীবরদী থানাধীন ষাটকাকড়া গ্রামের মোঃ আকিমদ্দিন এর ছেলে। স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য ভিকটিম বটন কান্তি বড়ুয়া ও আসামী মোঃ বাবুল মিয়া শেরপুর জেলার শ্রীবরদী থানাধীন ষাটকাকড়া গ্রামে কবিরাজ মোঃ হাবিবুর রহমান বাড়ীতে গমন করেন। চিকিৎসার ঔষধের টাকাকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ভিকটিম বটন কান্তি বড়ুয়াকে হত্যা করে লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে কবিরাজ হাবিবুর রহমানের ঘরের মেঝেতে পুতে রেখে উপরে সিমেন্ট দিয়ে ঠালাই করে দেয়। ঘটনার পর হতে আসামী মোঃ বাবুল মিয়া ও কবিরাজ মোঃ হাবিবুর রহমান তার পরিবারসহ পালিয়ে যায়। টানা ৪ দিন পর ভিকটিম বটন কান্তি বড়ুয়া এর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে র্যাবের একটি গোয়েন্দা সংস্থা কবিরাজ হাবিবুর রহমান এর বাড়ীতে অভিযান চালিয়ে ভিকটিম বটন কান্তি বড়ুয়ার লাশ উদ্ধার করে। এরই প্রেক্ষিতে ভিকটিমের পরিবারের সদস্য ছোটন বড়ুয়া বাদী হয়ে শেরপুর জেলার শ্রীবরদী থানায় একটি লিখিত এজাহার দায়ের করেন। যাহার মামলা নং-১৫, তারিখঃ ১৪/০৪/২০০৯ ইং, ধারা- ৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড । তদন্তকারী অফিসার মামলা তদন্ত শেষে আসামীদের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলার ঘটনার পর থেকেই আসামী মোঃ বাবুল মিয়া আত্মগোপনে চলে যায়। দীর্ঘ ১৫ বছর যাবৎআসামী মোঃ বাবুল মিয়া জাতীয় পরিচয়পত্র পরিবর্তন করে দেশের বিভিন্ন স্থানে মোঃ মোস্তফা কামাল ছদ্মনাম ধারন করে সবজি বিক্রেতার পেশায় নিয়োজিত ছিল। পরবর্তীতে, বিজ্ঞ দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল, শেরপুর গত ০৩/১০/২০১১ ইং তারিখে আসামী মোঃ বাবুল মিয়া (৪০)’কে ১৮৬০ সালের পেনাল কোড আইনের ৩০২/২০১/৩৪ ধারায় সন্দেহাতীতভাবে অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত করেন।
৩। এরই সূত্র ধরে বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করে আসামীর অবস্থান নিশ্চিত করে জামালপুর ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার মেজর মোঃ আবরার ফয়সাল সাদী এর নেতৃত্বে এবং মেজর আহনাফ রাসিফ হালিম, র্যাব-১, সিপিসি-২, উত্তরা, ঢাকা এর সহায়তায় র্যাবের একটি যৌথাভিযানিক দল ইং ০৫/০৪/২০২৪খ্রি. তারিখ অনুমান ২০:৩০ ঘটিকায় ডিএমপি ঢাকার উত্তর-পূর্ব থানা এলাকার পলওয়েল সুপার মার্কেটের সামনে হতে আসামী মোঃ বাবুল মিয়া(৪০), আলী হোসেন ওরফে হোসেন আলী, সাং-খৈলকুড়া, থানা-ঝিনাইগাতী, জেলা-শেরপুর‘কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
৪। ধৃত আসামীকে বিজ্ঞ আদালতে সোর্পদ করার নিমিত্তে শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
৫। এ ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে র্যাবের অভিযান ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে