অপরাধ

সিএমপি’র বায়েজিদ বোস্তামী থানার অভিযানে হত্যা মামলার মূল আসামি গ্রেফতার।

  প্রতিনিধি ৭ এপ্রিল ২০২৪ , ২:৩০:৩৩ প্রিন্ট সংস্করণ

সিএমপি'র বায়েজিদ বোস্তামী থানার অভিযানে হত্যা মামলার মূল আসামি গ্রেফতার।
সিএমপি'র বায়েজিদ বোস্তামী থানার অভিযানে হত্যা মামলার মূল আসামি গ্রেফতার।

সিএমপি’র বায়েজিদ বোস্তামী থানার অভিযানে হত্যা মামলার মূল আসামি গ্রেফতার।

বাদি জেসমিন আক্তার এর বড় ছেলে জোনায়েদ হোসেন প্রকাশ জিসানকে অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতিকারীরা গত ০১/০৪/২০২৪ খ্রি. তারিখ সন্ধ্যা অনুমান ০৭.৩০ ঘটিকা থেকে ০৩/০৪/২০২৪ খ্রি. তারিখ রাত অনুমান ০৮.৩০ ঘটিকার মধ্যবর্তী সময়ে বায়েজিদ বোস্তামী থানাধীন হাজিরপুল ইলিয়াছ কলোনির সওদাগর কলোনির আবদুল করিমের ভাড়া ঘরের ১৪নং কক্ষে হত্যা করে লাশ গুম করে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় বায়েজিদ বোস্তামী থানায় একটি হত্যা মামলা রুজু হয়।

উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) জনাব মোখলেছুর রহমানের সার্বিক দিকনির্দেশনায়, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার জনাব পংকজ দত্ত ও সহকারী পুলিশ কমিশনার জনাব বেলায়েত হোসেনের তত্ত্বাবধানে, তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মো. নাসির উদ্দিন সংগীয় ফোর্সসহ তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ঘটনায় জড়িত মেশকাতুর রহমান মেশকাতকে আটক করেন।

ভিকটিমের মা (বাদি) এর মোবাইলে থাকা অভিযুক্ত কর্তৃক দশ লক্ষ টাকা দাবি সংক্রান্ত কল রেকর্ডিং প্রাপ্ত হয়ে পর্যালোচনা করে এবং বর্ণিত অভিযুক্তের বন্ধু রুমমেট তাহসিফকে কল রেকর্ড শুনালে, সে উক্ত কল রেকর্ডিং তার রুমমেট অভিযুক্ত মেশকাতুর রহমান মেশকাতের ভয়েস মর্মে শনাক্ত করে। তার দেওয়া তথ্য ও সিসিটিভি ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনায় দৃশ্যে প্রাপ্ত তথ্য ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ০৫/০৪/২৪ খ্রি. তারিখ ১৫:০০ ঘটিকায় বর্ণিত অভিযুক্তকে কোতোয়ালি থানাধীন ডিসি হিল এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।

আটক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদে জানায় যে, সে ভিকটিমের নিকট থেকে নেওয়া মোবাইল ফোনটি বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে তার একই এলাকার বন্ধু জানে আলমের নিকট রেখেছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে বর্ণিত অভিযুক্তকে সঙ্গে নিয়ে তার শনাক্ত মতে চট্টগ্রাম জেলার আনোয়ারা থানাধীন পীরখাইন এলাকা থেকে জানে আলমকে আটক করলে জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে বর্ণিত অভিযুক্তের দেওয়া মোবাইল ফোনটি চট্টগ্রাম জেলার চন্দনাইশ থানাধীন চর বরমা বড়ুয়া পাড়ার বাসিন্দা সুমন বড়ুয়ার নিকট ৯৫০০/-টাকায় বিক্রয় করেছে। চন্দনাইশ থানাধীন চরবরমা বড়ুয়া পাড়া এলাকায় অভিযুক্ত ও জানে আলমের শনাক্ত মতে সুমন বড়ুয়া ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি উপস্থাপন করলে চন্দনাইশ থানাধীন চরবরমা বড়ুয়া পাড়াস্থ মেসার্স চরবরমা স্টোর নামীয় দোকানের সামনে থেকে জব্দ করা হয়।

অত:পর ঘটনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদকালে বর্ণিত অভিযুক্ত জানায় যে, ভিকটিম জোনায়েদ হোসেন প্রকাশ জিসানের বাবা একজন প্রবাসী এবং তারা উভয়ে একে অপরের পরিচিত। সেই সুবাদে জোনায়েদ হোসেন প্র. জিসান মাঝে মধ্যে তার বাসায় আসা-যাওয়া করত। গত ০১/০৪/২৪ খ্রি. তারিখ চলমান রমজান মাসে তারাবির নামাজ পড়ানোর হাদিয়া বাবদ ৬,০০০/- টাকা পেয়েছে মর্মে সে তার মাকে জানায় । উক্ত ৬,০০০/- টাকার বিষয়ে মা ও ছেলের মধ্যে মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়। মা ও ছেলের মনোমালিন্যের সুযোগ নিয়ে ইফতার শেষে চান্দগাঁও থানাধীন শমসের পাড়া ডেন্টাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফার্মেসি থেকে এক পাতা ১০ (দশ) টি ঘুমের ঔষধ ক্রয় করে এবং বায়েজিদ বোস্তামী থানাধীন হাজীরপুল মাবিয়া স্টোর থেকে পানীয় (মাঠা) ক্রয় করে বাসায় এসে উক্ত ঘুমের ঔষধ ও পানীয় (মাঠা) একত্রে মিশিয়েকরে রাখে। একই তারিখ সন্ধ্যা অনুমান ০৭:৩০ ঘটিকায় জোনায়েদ হোসেন প্রকাশ জিসান তার বাসায় আসে এবং ঘুমের ঔষধ মিশ্রিত পানীয় জোনায়েদ হোসেন প্রকাশ জিসানকে খেতে দেয়। তারা প্রায় ১৫/২০ মিনিট পর রুম থেকে বের হয়ে দোকানে যায় এবং পুনরায় ২/৩ মিনিট পর তারা রুমে আসে। জোনায়েদ হোসেন প্রকাশ জিসান ঘুমের ঔষধ মিশ্রিত পানীয় পান করার পর শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়লে অভিযুক্ত তাকে ধাক্কা দিয়ে বাথরুমে ফেলে দেয় এবং জোনায়েদ হোসেন প্রকাশ জিসান এর পিঠের উপর বসে দুই হাত দিয়ে গলা টিপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। একই তারিখ রাত ০৯:০০ মিনিটের সময় দরজা বন্ধ করে বাইরে চলে যায়।

অত:পর ভিকটিম জোনায়েদ হোসেন প্রকাশ জিসান এর মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য ৬/৭ মিনিট পর পুনরায় ঘটনাস্থলে আসে এবং ভিকটিমের গলা টিপে শ্বাসরোধ করে মৃত্যু নিশ্চিত করার পর ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নিয়ে বাথরুমের দরজা বন্ধ করে এবং রুমের দরজায় তালাবন্ধ করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। এরপর অনুমান ০১ ঘণ্টা পরে ভিকটিম জোনায়েদ হোসেন প্রকাশ জিসানেট ব্যবহৃত মোবাইল নং থেকে ভিকটিমের মায়ের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নাম্বারে কল করে ভিকটিম জোনায়েদ হোসেন প্রকাশ জিসানকে ফেরত পেতে হলে বাদির নিকট ১০,০০,০০০/- (দশ লক্ষ) টাকা দাবি করে।

আরও খবর

                   

সম্পর্কিত