খেলা

যেখানে হেরে গেছে দক্ষিণ আফ্রিকা

  স্পোর্টস ডেস্ক ৩০ জুন ২০২৪ , ১০:৩২:৫২ প্রিন্ট সংস্করণ

যেখানে হেরে গেছে দক্ষিণ আফ্রিকা
যেখানে হেরে গেছে দক্ষিণ আফ্রিকা ছবি সংগৃহিত

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ২০২৪- এর ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৭ রানে হারিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো ক্রিকেটের ক্ষুদ্রতম ফরম্যাটের বিশ্ব আসরের শিরোপা জিতে নিলো ভারত।

টস জিতে ব্যাটিং-এর সিদ্ধান্ত নিয়ে ভারত পুরো ২০ ওভার ব্যাট করে ১৭৬ রান তোলে। ওই রান তাড়া করতে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকা ৮ উইকেট হারিয়ে ২০ ওভারে ১৬৯ রান তুলতে পারে।

দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য এটা ছিল পুরুষ আইসিসি ইভেন্টের প্রথম বিশ্বকাপ ফাইনাল। আর ভারত, একের পর এক ফাইনাল ও সেমিফাইনালে হারতে হারতে ক্লান্ত হয়ে শেষ পর্যন্ত শিরোপা হাতে নিলো।

২০১৩ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পরে এটাই ভারতের প্রথম আইসিসি শিরোপা।

এর মাঝে ২০১৪ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনাল, ২০১৭ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনাল, ২০২৩ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনাল হেরেছে ভারতের জাতীয় ক্রিকেট দল।

ম্যাচ শেষে আনন্দের বহিঃপ্রকাশেই স্পষ্ট ছিল কতোটা আকাঙ্ক্ষিত ছিল ভারতের জন্য এই শিরোপা। রোহিত মাটিতে বসে পড়েছেন, কোহলি হার্দিককে জড়িয়ে ধরছেন, এদিক সেদিক হুড়োহুড়ির পরে গোটা দল অবিশ্বাসে বসে পড়া হার্দিককে ঘিরে জয়োল্লাস করলো কিছুক্ষণ।

এদিকে দক্ষিণ আফ্রিকান দলে ক্লান্তি নেমে এলো। আনরিখ নরকিয়া ১ বলে ৯ রান করতে যেন পৃথিবীর দীর্ঘতম এক হাঁটার পরে মাঠে নামলেন।এপর কেবল ১ বলে ১ রান নিয়ে আবার ফিরে গেলেন তিনি ধীরে।

কেবল ৩০ মিনিট আগেও মনে হচ্ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা ভারতকে হারিয়ে নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসের প্রথম বিশ্বকাপ শিরোপা ঘরে তুলবে। ৩০ মিনিট আগেও ৩০ বলে দরকার ছিল ৩০ রান, যেটা নিতে পারলো না দক্ষিণ আফ্রিকা।

এর আগে ২০০৭ সালে মাহেন্দ্র সিং ধোনির নেতৃত্ব ভারত টি-টোয়েন্টি ইতিহাসের প্রথম বিশ্বকাপেই শিরোপা জিতেছিল। আইপিএল শুরু হওয়ার পর এটাই ভারতের প্রথম বিশ্বকাপ শিরোপা জয়।

কেন ৩০ বলে ৩০ নিতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা?
মূলত ৫ উইকেট যাওয়ার পরেই দক্ষিণ আফ্রিকার শেষ ব্যাটার নেমে আসেন, মার্কো ইয়ানসেন। এরপর চারজন বোলার যারা ব্যাটিং জানেন না।

এখানেই দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচটা হেরে গেল।

হেইনরিখ ক্লাসেন যতক্ষণ ব্যাট করছিলেন ততক্ষণ মনে হচ্ছিল এই ম্যাচ দক্ষিণ আফ্রিকার হাতের মুঠোয়, মাত্র ২৩ বলে ৫৩ রান তোলার পথে আকসার প্যাটেলের এক ওভারে তিনি ২৪ রান তুলে নেন।

এরপরেও জসপ্রিত বুমরাহ’র ২ ওভার বাকি ছিল, এখানেই রোহিত তার আসল অস্ত্র জমা রেখে দেন।

তবে বুমরাহ নন, প্রায় নির্বিষ এক বলে ক্লাসেনকে সাজঘরে ফেরান হার্দিক পান্ডিয়া। সেই থেকে দক্ষিণ আফ্রিকা খোলসে ঢুকে যায়।

এক প্রান্তে ডেভিড মিলারও একেবারেই রক্ষণাত্মক খেলা শুরু করেন, ৭ বলে ১৪ করা মিলার, ১৭ বলে ২১ রান করে ১৯তম ওভারে আউট হন।

দক্ষিণ আফ্রিকার হাত থেকে ম্যাচ প্রায় বেরিয়ে গেছে তখন।

১৬,১৭ ও ১৮তম ওভারে ১৮ বলে মাত্র ১০ রান নিতে পারে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটাররা। বুমরাহ ২ ওভার ও হার্দিকের ১ ওভার করেন এই সময়ে।

হুট করেই দক্ষিণ আফ্রিকার দরকার হয় ১২ বলে ২০ রান। যেটা শেষ ওভারে দাঁড়ায় ১ ওভারে ১৬ রান।

‘দক্ষিণ আফ্রিকা নিজেদেরই যেন খোলসবন্দি করলো’
বিবিসির সরাসরি ধারাভাষ্যে ইংল্যান্ডের সাবেক নারী ক্রিকেটার অ্যালেক্স হার্টলে বলেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকা যেন নিজেদেরই খোলসবন্দি করে ফেলল। ক্লাসেনের উইকেটটা বড় ছিল, কিন্তু মিলারও ছিল তো, এটাই যথেষ্ট হওয়ার কথা ছিল।’

মিলার যেন শেষদিকে বুমরাহ’র বলে মিলার বেশিই সাবধানী ক্রিকেট খেলছিল। শেষ ১০ বলে মিলার নিয়েছেন কেবল ৭ রান।

তবে হার্টলে বলছেন পুরো ক্রেডিট জসপ্রিত বুমরাহ’র, ‘অনেকের চেয়ে অনেক এগিয়ে থেকে ম্যান অফ দ্য টুর্নামেন্ট এখন বুমরাহ।’

দক্ষিণ আফ্রিকা গোটা টুর্নামেন্টেই একজন ব্যাটার কম নিয়ে খেলেছে, কিন্তু তাদের ক্ষতি হলো ফাইনাল ম্যাচে।

তবে এইখানে সুরিয়া কুমার ইয়াদাভের ক্যাচের কথাও বলছেন অনেকে, যখন ৬ বলে ১৬ দরকার, বাউন্ডারি লাইনে অসাধারণ এক ক্যাচ নিয়ে ম্যাচ ভারতের পক্ষে নিয়ে আসেন সুরিয়া কুমার।

হার্দিক পান্ডিয়ার ফুলটস বলে মিলার বাউন্ডারি পার করার চেষ্টা করছিলেন কিন্তু সুরিয়া বাউন্ডারি লাইনে বল ধরে আবার ভেতরে ছুড়ে সেই বল সফলভাবে তালুবন্দি করেছেন।

এই ক্যাচটাই দক্ষিণ আফ্রিকার হার প্রায় নিশ্চিত করে দিয়েছে।

আরও খবর

                   

সম্পর্কিত