স্পোর্টস ডেস্ক ২৪ জুন ২০২৪ , ১২:৫৯:৩৬ প্রিন্ট সংস্করণ
আর্জেন্টাইন সুপার স্টার লিওনেল মেসি আজ থেকে ঠিক ৩৭ বছর আগে ১৯৮৭ সালের ২৪ জুন আর্জেন্টিনার রোজারিও শহরে জন্মগ্রহণ করেন। ছোটখাটো গড়নের বড় জাদুকরের আজ ৩৭তম জন্মদিন। নিজের বাঁ পায়ের জাদুতে যিনি বশ করেছেন গোটা ফুটবল বিশ্বকে। শুভ জন্মদিন লিওনেল মেসি। বর্তমানে আকাশি-নীল শিবিরের হয়ে কোপা আমেরিকা মাতাচ্ছেন মেসি। ব্যস্ত সময় হলেও আজকের সকালটা রেকর্ড আটবারের ব্যালন ডি’অরজয়ী এই ফুটবলারের জন্য বিশেষ দিন।
মেসির বাবা হোর্হে হোরাসিও মেসি ছিলেন একটি ইস্পাত কারখানার শ্রমিক। মা সেলিয়া মারিয়া কুচ্চিত্তিনি ছিলেন খণ্ডকালীন পরিচ্ছন্নতা কর্মী। তার পৈতৃক পরিবারের আদি নিবাস ইতালির আকোনা শহরে। তার পূর্বপুরুষদের একজন অ্যাঞ্জেলো মেসি ১৮৮৩ সালে আর্জেন্টিনায় এসে বসতি গাঁড়েন। মেসির রয়েছে দুই বড় ভাই এবং এক ছোট বোন।
মেসি পরিবারের থেকে উদ্বুদ্ধ হওয়ায় ছোটবেলা থেকেই ফুটবলের প্রতি আলাদা নেশা ছিল। বড় দুই ভাই রদ্রিগো ও মাতিয়াস আর তার কাজিন ইমানুয়েন বিয়াঙ্কুকি, ম্যাক্সিমিলিয়ানো ছিলেন মেসির ফুটবল খেলার সঙ্গী। ৬ বছর বয়সে নিউওয়েলস অল্ড বয়েজ ক্লাবে যোগ দেন মেসি। সেখানে ৬ বছর খেলেন তিনি। এই ৬ বছরে তার পা থেকে গোল আসে প্রায় ৫০০। আর সেই সুবাদে তখন তার নাম হয় ‘৮৭ এর গোল মেশিন।’
১০ বছর বয়সে গ্রোথ হরমোন ডেফিসিয়েন্সি নামক এক রোগ বাসা বাধে তার দেহে। যে কারণে থমকে যায় তার দেহের বৃদ্ধি। প্রতিমাসে তার এই রোগের চিকিৎসার জন্য খরচ হতো ১ হাজার ডলার। প্রথমে তার ক্লাব নিউওয়েলস সেই খরচে অংশীদার হতে চাইলেও পরে হাত গুটিয়ে নেয় তারা।
পরে রিভারপ্লেট ক্লাব তাকে দলে ভিড়িয়ে চিকিৎসা খরচ বহন করতে চাইলেও শেষ মুহূর্তে পিছিয়ে যায় তারাও। যে কারণে শঙ্কা দেখা দেয় মেসির বেড়ে ওঠা নিয়ে। ২০০০ সালের সেপ্টেম্বরে বার্সেলোনা তার জুনিয়র দলের জন্য মেসির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়। এরপর শুরু হয় তার চিকিৎসা। ১৪ বছর বয়সে এসে শেষ হয় তার চিকিৎসা।
২০০৫ সালে নিজের ১৮তম জন্মদিনের দিন মেসি যোগ দেন বার্সেলোনার মূল দলে। সেই থেকে শুরু। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকানো লাগেনি তারকা এই ফুটবলারকে। ২০০৬ সালে বিশ্বকাপে অভিষেক হয় তার। ২০০৮-০৯ মৌসুমে প্রথম ট্রেবলের স্বাদ পান মেসি। ২০০৯-১০ মৌসুমে জেতেন প্রথম ব্যালন ডি’অর। ২০১২ সালটা ছিল মেসির রেকর্ড গড়ার বছর। এ বছরই প্রথম এক ম্যাচে পাঁচ গোল দেয়ার রেকর্ড গড়েন তিনি। সে আসরের সর্বোচ্চ গোলদাতাও ছিলেন তিনি। সে বছরেই মেসি বনে যান বার্সেলোনার সর্বোচ্চ গোলদাতা।
২০১৪-১৫ মৌসুমে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ট্রেবল জয় করেন মেসি। ২০১৯-২০ মৌসুমে রেকর্ড ষষ্ঠ ব্যালন ডি’অর নিজের ঝুলিতে পুরেন মেসি। ২০২১ সালে তিনি বার্সেলোনার সঙ্গে দুই দশকের সম্পর্ক ছিন্ন করে পাড়ি জমান ফ্রান্সের প্যারিস সেইন্ট জার্মেইয়ে। ২০১৮ বিশ্বকাপে ফ্রান্সের কাছে স্বপ্নভঙ্গের পর সেখান থেকে শিক্ষা নিয়েই যেন ঘুরে দাঁড়িয়েছেন মেসি। ফিনালিশিমা, ফিনালিশিয়া, কোপা আমেরিকা জয়ের পর ২০২২ সালের বিশ্বকাপে এসে ক্যারিয়ারের একমাত্র অপূর্ণতাটা পূর্ণ হয় ক্ষুদে এই জাদুকরের। লুসাইল স্টেডিয়ামে সেই ফ্রান্সকেই হারিয়ে স্বাদ নেন বিশ্বকাপের।