প্রতিনিধি ২০ মে ২০২৪ , ১২:৫০:২৬ প্রিন্ট সংস্করণ
১০ বছরের কম বয়সী ৩০ জন স্কুলছাত্রের সঙ্গে বিকৃত যৌনাচার করেছেন ৩৩ বছরের এক শিক্ষক। পড়াশোনার নামে শিশুদের ধর্ষণ করে তিনি মোবাইলে ধারণ করতেন। সেগুলো জমা রাখতেন পেনড্রাইভ, কম্পিউটার ও এক্সটার্নাল হার্ডডিস্কে।
আন্তর্জাতিক সংস্থার সহায়তায় সেই যৌন নিপীড়ককে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) জানায়, যৌন নিপীড়নের দৃশ্যগুলো ভিডিও ধারণ করে তিনি নিজের মোবাইল ফোন, পেনড্রাইভ, কম্পিউটার এবং হার্ডডিস্কে সংরক্ষণ করে রাখতেন। সার্চ ইঞ্জিন এসব তথ্য পৌঁছে দেয় যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ন্যাশনাল সেন্টার মিসিং অ্যান্ড এক্সপ্লয়েটেড চিলড্রেন (এনসিএমইসি) নামে এক প্রতিষ্ঠানের কাছে।সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএসপি) মো. আজাদ রহমান জানান, ওই শিক্ষক যৌন নিপীড়নের ভিডিও ধারণ করে সে নিজের মুঠোফোন, পেনড্রাইভ, কম্পিউটার এবং এক্সটার্নাল হার্ডডিস্কে সংরক্ষণ করে রাখেন। সার্চ ইঞ্জিন এসব তথ্য পৌঁছে দেয় যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ন্যাশনাল সেন্টার ফর মিসিং অ্যান্ড এক্সপ্লোয়েটেড চিলড্রেন (এনসিএমইসি) নামের একটি প্রতিষ্ঠানের কাছে। বাংলাদেশে এই প্রতিষ্ঠানের সহযোগী হিসেবে কাজ করে সিআইডি। তাই এনসিএমইসি এসব ভিডিওকে ‘চাইল্ড অ্যাবিউজড’ কনটেন্ট হিসেবে সিআইডিকে পাঠায়। এ তথ্যের ভিত্তিতে সিআইডির নিজস্ব ক্রিমিনাল ইন্টেলিজেন্স টিম তদন্ত শুরু করে।
এসব তথ্যের ভিত্তিতে শনিবার (১৮ মে) সিআইডির একটি বিশেষ টিম তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে রাজশাহী শহরের শ্যামপুর ডাঁশমারী এলাকায় অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত মো. আব্দুল ওয়াকেলকে গ্রেফতার করে।
প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, আব্দুল ওয়াকেল কাটাখালীর আশরাফ মেমোরিয়াল মডেল স্কুলের শিক্ষক। ছাত্রাবস্থায় তিনি একটি একটি কোচিং সেন্টারে শিক্ষকতা করতেন। তখন থেকেই তিনি কোচিংয়ের ছাত্রদের বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে সখ্য গড়ে তুলতেন। পরবর্তীতে ভুক্তভোগীদের কৌশলে কোচিং সেন্টার, নিজ বাড়িতে অথবা কখনো কখনো আশেপাশের বাগানে নিয়ে যেতেন। শিশু-কিশোর ছাত্রদের চকলেট এবং মোবাইল গেম খেলতে দিতেন। বাচ্চারা তখন জনপ্রিয় পাবজি গেম খেলা নিয়ে প্রচণ্ড ব্যস্ত থাকতো। এই সুযোগে তাদের সাথে অপ্রাকৃতিক যৌনলালসা চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে সে শিশু বাচ্চাদের প্যান্ট খুলে ফেলতো এবং বিকৃত যৌনাচার করতেন। পূর্ব থেকে সেট করা মোবাইল ক্যামেরায় যৌনাচারের ভিডিও ধারণ করে তা সংরক্ষণ করে রাখতেন। যৌন নিপীড়নের শিকার সব শিশুরা তার ছাত্র ছিল।
অভিযুক্তের বিরুদ্ধে তার বর্তমান কর্মস্থল আশরাফ মেমোরিয়াল মডেল স্কুল, কাটাখালী, রাজশাহীর প্রধান শিক্ষক বাদী হয়ে পল্টন মডেল থানায় ডিএমপিতে পেনাল কোড, ১৮৬০ এবং পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১২ মোতাবেক একটি মামলা করেছেন।
সিআইডির এসএস আজাদ জানান, সারাবিশ্বে শিশুদের যৌন নির্যাতন প্রতিরোধ এবং অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার জন্য আইওএম, ইউএনওডস, এনসিএমইসি, ফেসবুক, গুগল, মাইক্রোসফট ও সিআইডি একসঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে।