প্রতিনিধি ১৮ মে ২০২৪ , ১১:৪১:৫০ প্রিন্ট সংস্করণ
চট্টগ্রাম মহানগরীর হামিদচর এলাকার আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর রেস্টুরেন্ট কর্মচারি রিয়াদ হত্যা মামলার এজাহার নামীয় পলাতক আসামি কবির ও তার এক সহযোগীকে ঢাকা সদরঘাট এলাকা হতে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম।
বাংলাদেশ আমার অহংকার এই স্লোগান নিয়ে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে জোড়ালো ভূমিকা পালন করে আসছে। র্যাব সৃষ্টিকাল থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ এর উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতারসহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। র্যাব-৭, চট্টগ্রাম অস্ত্রধারী সস্ত্রাসী, ডাকাত, ধর্ষক, দুর্ধর্ষ চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনী, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী ও প্রতারকদের গ্রেফতার এবং বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও মাদক উদ্ধারের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করায় সাধারণ জনগনের মনে আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ইং তারিখ চট্টগ্রাম মহানগরীর চান্দগাঁও থানাধীন হামিদচর এলাকার কর্ণফুলী রিভারভিউ রেস্টুরেন্টের মালিক মোহাম্মদ ইকবালের সঙ্গে বাবুল মিয়া নামক স্থানীয় এক যুবকের বাকবিতন্ডা হয়। পরবর্তীতে গত ১৪ মার্চ ২০২৪ইং তারিখ বাবুলের অনুসারীরা ধৃত আসামি কবির এর নেতৃত্বে দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ইকবালের রেস্টুরেন্টে হামলা চালায়। এ সময় রেস্টুরেন্টের কর্মচারীরা বাধা দিলে তাদের হত্যার উদ্দেশ্যে রাম দা, কিরিচসহ ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়িভাবে কুপিয়ে গুরুত্বর রক্তাক্ত জখম করে পালিয়ে যায। হামলাকারীদের আঘাতে রেস্টুরেন্টে কর্মরত আনুমানিক ০৮ জন কর্মচারী গুরুতর আহত হয়। পরবর্তীতে সংবাদ পেয়ে চান্দগাঁও থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় আহতদের উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রেস্টুরেন্ট কর্মচারী রিয়াদ’কে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত রিয়াদ রিভারভিউ রেস্টুরেন্টের ব্যবস্থাপক পদে র্কমরত ছিল। উক্ত নৃশংস হত্যার ঘটনাটি চট্টগ্রামসহ সারাদেশে ব্যাপক আলোচিত ও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
উক্ত ঘটনায় রেস্টুরেন্ট মালিক মোহাম্মদ ইকবাল এর বাবা মোঃ ইউসুফ সওদাগর বাদী হয়ে চট্টগ্রাম মহানগরীর চান্দগাঁও থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-২৬, তারিখ- ১৪ মার্চ ২০২৪ইং, ধারা-১৪৩/৪৪৭/৪৪৮/৩২৩/৩২৪/ ৩২৫/৩২৬/৩০৭/৪২৭/৩০২/৩৪ পেনাল কোড ১৮৬০। মামলা দায়ের হওয়ার পর হতে আসামিরা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নিকট হতে গ্রেফতার এড়াতে এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যায়।
র্যাব-৭, চট্টগ্রাম সূত্রে বর্ণিত মামলার পলাতক আসামিদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরধারী এবং ছায়াতদন্ত অব্যাহত রাখে। নজরধারীর এক পর্যায়ে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন সূত্রে জানতে পারে যে, বর্ণিত মামলার এজাহার নামীয় পলাতক আসামি কবির এবং মামুন আইন শৃংখলা বাহিনীর নিকট হতে গ্রেফতার এড়াতে ছদ্মবেশে ঢাকা মহানগরীর কোতোয়ালী থানাধীন সদরঘাট এলাকায় অবস্থান করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৭ চট্টগ্রাম এবং র্যাব-১০ কেরানীগঞ্জ এর যৌথ আভিযানিক দল গত ১৬ মে ২০২৪ইং তারিখ বর্ণিত স্থানে অভিযান পরিচালনা করে আসামি ১। কবির (২৮) এবং ২। মামুন (১৮), উভয় পিতা-মোঃ হোসেন, সাং-হামিদচর, থানা-চান্দগাঁও, জেলা-চট্টগ্রামদের আটক করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে গ্রেফতারকৃত আসামি’দের জিজ্ঞাসাবাদে তারা সূত্রে বর্ণিত হত্যা মামলার এজাহার নামীয় পলাতক আসামি মর্মে স্বীকার করে এবং মামালা রুজু হওয়ার পর হতে আইন শৃংঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিকট হতে গ্রেফতার এড়াতে ঢাকা মহানগরীর কোতোয়ালী থানাধীন সদরঘাট এলাকায় আত্মগোপন করে ছিল মর্মে স্বীকার করে।
গ্রেফতারকৃত আসামি সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে চট্টগ্রাম মহানগরীর চান্দগাঁও থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।