আন্তজার্তিক ডেস্ক ৮ ডিসেম্বর ২০২৪ , ৫:৫৫:৫১ প্রিন্ট সংস্করণ
বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) আক্রমণের মুখে সিরিয়ার ‘স্বৈরশাসক’ প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। এর ফলে মাত্র ১২ দিনে পতন ঘটলো সিরিয়ার আসাদ পরিবারের ৫৪ বছরের এবং বাশার আল আসাদের ২৪ বছরের শাসনামল।
আজ রোববার (৮ ডিসেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ট ট্রাম্প নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে সিরিয়ার বিষয়ে একটি পোস্ট দিয়েছেন। খবর রয়টার্সের।
পোস্টে ট্রাম্প লেখেন, রাশিয়ার সমর্থন হারানোর পরেই আল-আসাদ দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। আসাদের পতন হয়েছে। ভ্লাদিমির পুতিন নেতৃত্বাধীন রাশিয়া আসাদকে রক্ষা করতে আর আগ্রহী নয়।
এর আগে গত শুক্রবার সিরিয়ায় যখন বিদ্রোহীদের অভিযান তুঙ্গে তখন ট্রুথ সোশ্যালের এক পোস্টে ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, সিরিয়া একটি বিশৃঙ্খল রাষ্ট্র। দেশটি আমাদের বন্ধু নয়। সিরিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কিছু করার নেই। এটা আমাদের লড়াই নয়। যারা লড়ছে, তাদের লড়তে দিন। এর মধ্যে যুক্ত হওয়ার দরকার নেই।
সিরিয়া ছেড়ে পালিয়ে কোথায় গেলেন আসাদ, অবস্থান নিয়ে ধোঁয়াশা।
এদিকে রোববার হোয়াইট হাউসের প্রকাশিত বিবৃতির বরাত দিয়ে আল জাজিরা জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট বাইডেন এবং তার দল সিরিয়ার নজিরবিহীন এই ঘটনা ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং আঞ্চলিক অংশীদারদের সাথে এ বিষয়ে নিরবিচ্ছিন্ন যোগাযোগ রাখছে,
প্রসঙ্গত, প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ ২০০০ সাল থেকে সিরিয়ার ক্ষমতায় ছিলেন। এর আগে তার বাবা হাফেজ আল-আসাদ ২৯ বছর দেশটি শাসন করেছিলেন। তবে ২০১১ সালে প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। ওই সময় বিক্ষোভকারীদের দমনে কঠোর পন্থা অবলম্বন করেন তিনি। এরপর বিক্ষোভকারীরা সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু করেন। এতে করে দেশটিতে শুরু হয় গৃহযুদ্ধ।
যদিও ২০১৫ সালে বাশার আল আসাদকে বাঁচাতে এগিয়ে আসে রাশিয়া। সে বছর সিরিয়ার বিভিন্ন অঞ্চল লক্ষ্য করে ব্যাপক বিমান হামলা চালায় তারা। এরপর বিদ্রোহীরা পিছু হটতে বাধ্য হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে লেবাননের শিয়া সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ দুর্বল হয়ে যাওয়ায় এবং ইউক্রেন নিয়ে রাশিয়ার ব্যস্ত থাকার সুযোগে বিদ্রোহীরা আবারও তৎপর হয়ে উঠে। এরই একপর্যায়ে সম্প্রতি বিদ্রোহীরা হামলা শুরু করে এবং এই হামলার মুখে নাটকীয়ভাবে দামেস্ক ছেড়ে পালালেন প্রেসিডেন্ট আসাদ। রোববার দামেস্ক ‘মুক্ত’ করার ঘোষণা দিল বিদ্রোহীরা। এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে কার্যত সিরিয়ায় দীর্ঘ ৫৪ বছরের স্বৈরশাসনের অবসান ঘটল।