শিক্ষা

ডুয়েট ভর্তিযুদ্ধের শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতি।

  ডুয়েট প্রতিনিধি ১৭ অক্টোবর ২০২৪ , ১০:৫১:০৭ প্রিন্ট সংস্করণ

বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের অধীন চার বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পন্ন করার পর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের উচ্চশিক্ষার জন্য দেশের একমাত্র প্রতিষ্ঠান ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যাল,গাজিপুর। প্রতিবছর দেশের বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি পলিটেকনিক থেকে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পন্ন করে আসা প্রায় দশ হাজার শিক্ষার্থী ডুয়েটের ৬৭০ টি আসনের বিপরীতে ভর্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে।

ডুয়েটের সেশনজট, শিক্ষকদের আন্দোলন, কোটা আন্দোলন, স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন এবং আন্দোলন পরবর্তী বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কার কার্যক্রমের কারণে এবার কিছুটা দেরিতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ডুয়েট ভর্তি পরিক্ষা। বিশ্ববিদ্যালয়ের নোটিশ মোতাবেক সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ১৭ এবং ১৮ ই নভেম্বর দুইটি করে মোট চারটি শিফটে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ডুয়েট ভর্তি পরিক্ষা।

ডুয়েট ভর্তি পরিক্ষার প্রশ্ন প্যাটার্ন অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় কিছুটা আলাদা এজন্য প্রস্তুতি নিতে হয় ভিন্ন ভাবে। ফিজিক্স,কেমেষ্ট্রি, ম্যাথমেটিক্স, ইংলিশ ছাড়াও বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পন্ন করা শিক্ষার্থীদের জন্য ডিপার্টমেন্ট ভিত্তিক আলাদা প্রশ্ন হয়ে থাকে। ফিজিক্স, কেমেষ্ট্রি, ম্যাথমেটিক্স প্রতি বিষয়ে ৪০ এবং ইংলিশে ৩০ করে মোট ১৫০ নম্বরের নন-টেকনিক্যাল প্রশ্ন হয় এবং টেকনিক্যাল অংশেও মোট ১৫০ নম্বরের প্রশ্ন মিলিয়ে মোট ৩০০ নম্বরের প্রশ্ন থাকে ডুয়েটের ভর্তি পরিক্ষায়। তবে নন-টেকনিক্যাল অংশে ইংরেজিতে ২০% এবং নন-টেকনিক্যাল অংশের মোট ১৫০ নম্বেরর ৪০% নম্বর অর্জন করলে একজন শিক্ষার্থীর প্রাথমিক বাছাই প্রক্রিয়ায় উত্তীর্ণ হন। কেবল প্রাথমিক বাছাই প্রক্রিয়ায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের টেকনিক্যাল অংশের খাতা মূল্যায়ন করা হয়।

তাই একজন শিক্ষার্থীকে ডুয়েট উপযোগী হয়ে উঠার জন্য সমান ভাবে টেকনিক্যাল এবং নন-টেকনিক্যাল অংশে পারদর্শী হতে হয়। ডুয়েটের একটি সিট আপন করে নেয়ার জন্য তাই একটু গোছানো প্রস্তুতি প্রয়োজন। ফিজিক্স,কেমেষ্ট্রি এবং ম্যাথমেটিক্স শেষমুহুর্তের প্রস্তুতির জন্য ডুয়েট প্রশ্নব্যাংক এর সাথে সাথে অন্যান্য ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়, SUST, BUTex এর প্রশ্নব্যাংকেও চোখ বুলানোই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। ডুয়েটের বিগত কয়েক বছরের প্রশ্ন ঘাটাঘাটি করলে সহজে ই বোঝা যায় নন-টেকনিক্যাল অংশে বিশেষ করে ফিজিক্স এবং ম্যাথমেটিক্সে অ্যানালাইসিস টাইপ প্রশ্নই বেশি আসছে। তাই বেশি বেশি ম্যাথ প্রাকটিস এর পাশাপাশি সুত্রের প্রতিপাদন গুলোও একবার দেখে নিলে ভর্তিযুদ্ধেও একধাপ এগিয়ে থাকবে। বিভিন্ন সস্তা নোট, গাইড এর উপর নির্ভরশীল না হলে বোর্ড বই গুলো ভালভাবে রিভিশন দিতে হবে।

টেকনিক্যাল অংশের প্রস্তুতির জন্য গাইড নির্ভর হওয়া যায়। টেকনিক্যাল অংশের যে টপিক গুলো ভর্তি পরিক্ষার সিলেবাসে আছে তা বিস্তারিত ভাবে জানতে হবে। প্রতিটি থিওরি এবং থিওরি সম্পর্কিত প্রতিপাদন এবং তার এপ্লিকেশন ভাল ভাবে শিখতে হবে। এক্ষেত্রে বাজারের নোট বা গাইড বই গুলোর সবচেয়ে আপডেটেড ভার্সন গুলোর সাহায্য নিতে হবে। বিগত কয়েক বছরের প্রশ্ন ঘাটাঘাটি করলে বুঝা যাবে যে টেকনিক্যাল অংশের প্রশ্নে যথেষ্ট বৈচিত্র্য আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। তাই গতানুগতিক ধারার বাইরে গিয়ে যেকোন টপিকের থিওরি, থিওরি সম্পর্কিত প্রতিপাদন এবং ঐ সম্পর্কিত ম্যাথ এই সিকোয়েন্সে নোট করে রাখা, যাতে পরিক্ষার আগের কয়েকদিন খুব দ্রুত সময়ে বেশিরভাগ টপিক রিভিশন দেয়া যায়। ডুয়েট ভর্তি পরিক্ষার আগে আগে বিভিন্ন কোচিং সেন্টার এবং এক্সাম সেন্টার মডেল, প্রি-মডেল, ইউনিট ভিত্তিক পরিক্ষার আয়োজন করে থাকে। সকল পরিক্ষায় অংশগ্রহণ করার প্রয়োজন নেই। তবে বিভিন্ন কোচিং এর প্রশ্ন গুলো সংগ্রহ করে বাসায় বসে প্রশ্ন গুলো সমাধান করার মাধ্যমে শেষমুহুর্তে প্রস্তুতিকে আরো শানিত করা যায়।
ডুয়েট ভর্তি পরিক্ষার জন্য গাজীপুরে এসে পারিপার্শ্বিক বিভিন্ন কারণে অনেক শিক্ষার্থী হতাশায় ভোগে, শেষমুহুর্তে অনেক বেশি দুশ্চিন্তার কারণে অসুস্থ হয়ে ভর্তি যুদ্ধ থেকে ছিটকে যায় অনেক শিক্ষার্থী। তাই পড়াশোনার পাশাপাশি নিয়মিত খেলাধুলা কিংবা সকালে গাজীপুরের সবুজ প্রকৃতির মাঝে খানিকটা হাটাহাটি একজন শিক্ষার্থীকে শারীরিক এবং মানুষিক ভাবে শক্তিশালী করে তুলতে পারে। পরিবারের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা অত্যন্ত কার্যকর। তাছাড়া বিভিন্ন কোচিং এবং এক্সাম সেন্টারে পরিক্ষায় ভাল করতে না পারার কারণে ও অনেকে হতাশ হয়ে যায়। তাই অনেক বেশি মডেল পরিক্ষায় অংশ না নিয়ে শুধু মাত্র রেপুটেটেড কোচিং গুলোর মডেল পরিক্ষায় অংশ নেয়া উচিত।

আরও খবর

                   

সম্পর্কিত